Barrackpore

ব্যবসায়ী খুনে জড়িত ঘনিষ্ঠ কেউই, উদ্দেশ্য নিয়ে ধন্দে পুলিশ

এ দিন সকালেই নান্না হাসপাতালের কাছে মহিলাদের এক মেসবাড়ির পাশে রাস্তার ধার থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধারের খবরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। প্রথমে সেটাই নিহত ব্যক্তির ফোন বলে ভাবাহয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ব্যারাকপুর শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২২ ০৮:২৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

হালিশহরে ব্যবসায়ীকে খুনের ঘটনায় রহস্য এখনও পুরোপুরি উদ্ঘাটিত হয়নি বলেই দাবি তদন্তকারীদের। শনিবার রাতে হালিশহরের জেঠিয়া থানার উত্তর নান্না এলাকায় নিজের বাড়িতেই খুন হন চশমার দোকানি ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায় (৬০)। আততায়ীরা তাঁর বিশেষ পরিচিত বলেই প্রাথমিক তদন্তে জানিয়েছে পুলিশ। কারণ, ওই ব্যবসায়ীর বাড়ির সদর দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। বাড়ির পিছনের দরজা, যেটি পরিচারিকার যাওয়া-আসার জন্য ভাস্কর নিজেই খুলে রাখতেন, সেখান দিয়েই খুনিরা যাওয়া-আসা করেছিল বলে সন্দেহ পুলিশের। এবং খুনের আগে ভাস্করের সঙ্গে হামলাকারীদের যে ধস্তাধস্তি হয়েছিল, ঘরে সেই চিহ্নও স্পষ্ট। ঘরের সব জিনিসপত্র লন্ডভন্ড হয়ে থাকলেও পেডেস্টাল ফ্যানটি দাঁড় করানোই ছিল। কিন্তু সেটির নীচের অংশে দু’জায়গায় রক্তের দাগ পাওয়া গিয়েছে। ফ্যানের নীচের ওই অংশ দিয়েই ভাস্করের মাথার পিছনে প্রথমে আঘাত করা হয়েছিল বলে অনুমান। পরে বালিশ চাপা দিয়ে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ। এই ঘটনায় পুলিশের সন্দেহের তালিকায় আছেন ভাস্করের দোকানের প্রাক্তন কর্মচারী এক মহিলা।

Advertisement

পুলিশ ইতিমধ্যে বেশ কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও কাউকে গ্রেফতার করেনি। এক যুবককে জেঠিয়া থানা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। পুলিশজানিয়েছে, তাঁর বক্তব্যের পাশাপাশি অন্যদের জেরা করে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া সোমবার বলেন, ‘‘খুনই যে করা হয়েছে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। পরিচিত কেউই এ কাজ করেছে। কিন্তু সে কেন খুন করল, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা আছে। বেশ কিছু তথ্য হাতে এসেছে। নিহত ব্যক্তির ফোনের কল লিস্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

প্রসঙ্গত, এ দিন সকালেই নান্না হাসপাতালের কাছে মহিলাদের এক মেসবাড়ির পাশে রাস্তার ধার থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধারের খবরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। প্রথমে সেটাই নিহত ব্যক্তির ফোন বলে ভাবাহয়েছিল। সন্ধ্যায় অবশ্য পুলিশ জানায়, ভাস্করের ফোন ও চশমা এখনও উদ্ধার হয়নি। দীর্ঘ ছুটি কাটানোর পরে এ দিন ভোরে মেয়েকে নিয়ে বেঙ্গালুরু থেকে বাড়ি ফিরেছেন ভাস্করের স্ত্রী বাসবদত্তা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তিনি বা তাঁর পরিবারের কেউই এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি। প্রতিবেশীদের একাংশ আবার পুলিশের ভূমিকায় বিরক্ত। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ কমিশনার নিজে এসে সরেজমিনে সব দেখে যাওয়ার পরেও স্থানীয় থানা এত বড় ঘটনা নিয়ে বিশেষ গা করছে না। যদিও পুলিশ এই অভিযোগ মানতে চায়নি। শনিবার সন্ধ্যায় কল্যাণগড়ে ভাস্করের সঙ্গে এক মহিলা ও এক যুবককে দীর্ঘক্ষণ কথা বলতে দেখেছিলেন বলে দাবি করেছেন প্রতিবেশীদের কয়েক জন। তাঁরা জানান, ভাস্করের বাড়িতেও ওই মহিলাকে বহু বার আসতে দেখা গিয়েছে।

Advertisement

তদন্তকারীরা জানান, ভাস্করের কল লিস্ট ও চ্যাট রেকর্ডে এক মহিলার সঙ্গে নিয়মিত কথোপকথনের তথ্য পাওয়া গেলেও তিনিই এই খুনের ঘটনায় জড়িত কি না, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে রাতের দিকে মাঝেমধ্যেই কয়েক জন ভাস্করের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বাড়িতে আসতেন বলে পুলিশ জেনেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement