বিক্ষোভ: পথে নেমেছেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। ছবি: দিলীপ নস্কর
তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত হল ফলতা। গোলমালে জখম হয়েছেন ৬ জন। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বেলসিং দলীয় কার্যালয়ের সামনে।
পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরে ফলতায় নানা দুর্নীতি ও তোলাবাজির অভিযোগ উঠছিল। তার জেরে ফলতার অর্থনৈতিক অঞ্চলে একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়ে যায় বলে অভিযোগ। কিছুদিন আগে ওই এলাকার এক নার্সিংহোমের মালিকের কাছ থেকে দু’কোটি টাকা তোলা চাওয়ার অভিযোগ সামনে আসে। মাসখানেক আগে নিজের জমিতে ফল-ফুলের চাষের জন্য মাটি ফেলতে গেলে এক ইঞ্জিনিয়ারের কাছ থেকে দু’লক্ষ টাকা তোলা চাওয়া হয় বলে অভিযোগ। টাকা দিতে অস্বীকার করায় ওই ইঞ্জিনিয়ার ও তাঁর স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ ওঠে নানা সময়ে।
এলাকায় এই সব ঘটনায় নাম জড়ায় তৃণমূলের ব্লক সভাপতি জাহাঙ্গির খানের। তাঁর মদতেই এই সব ঘটছে বলে দলের অন্দরেই অভিযোগ ওঠে। এর জেরেই এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ এলাকার ১৩টি পঞ্চায়েত এলাকা থেকে কর্মী-সমর্থকেরা জাহাঙ্গির খানের দলীয় কার্যালয়ের সামনে হাজির হন। সভাপতি পদ থেকে জাহাঙ্গিরের অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা।
অভিযোগ, সে সময়ে জাহাঙ্গিরের কয়েকজন অনুগামী তাঁদের উপরে চড়াও হয়ে মারধর করে। জনা ছ’য়েক কর্মী-সমর্থক জখম হন। তাঁদের স্থানীয় নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, পুলিশের সামনেই সমস্ত ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আন্দোলনকারী বলেন, “এই অন্যায় মেনে নেওয়া যায় না। উনি একাই এলাকায় নানা অন্যায় কাজে মদত দিচ্ছেন। তাঁর নির্দেশে পুলিশও নির্বিকার।”
এ বিষয়ে জাহাঙ্গির বলেন, “এলাকার এক পঞ্চায়েতের সভাপতি ঠিকঠাক কাজ না করায় সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই আক্রোশে আজ জনা তিরিশ কর্মী-সমর্থক বিক্ষোভ দেখান। দলবিরোধী কাজের জন্য ওঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” কারখানা বন্ধ, নার্সিংহোমে তোলা তোলার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “ওরা সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ করছে। কিছু একটা ঘটাতে গেলে একটা অজুহাত খাড়া করতে হয়। সেটাই ওরা করছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, পুরো বিষয় তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।