প্রতিবাদরত সন্দেশখালির মহিলারা। — ফাইল ছবি।
সন্দেশখালি নিয়ে পুলিশ যে ১০ জনের বিশেষ দল তৈরির কথা ঘোষণা
করেছিল সোমবার, মঙ্গলবার সকালে সেই দলের প্রধান হিসাবে ডিআইজি সিআইডি সোমা দাস মিত্র
সন্দেশখালি থানায় পৌঁছলেন। তাঁর সঙ্গেই থানায় ঢোকেন আরও এক ডিআইজি পদমর্যাদার
আইপিএস আধিকারিক দেবস্মিতা দাসও।
গত সপ্তাহে দফায় দফায় অশান্তির ঘটনা ঘটেছিল সন্দেশখালিতে। রাস্তায় নেমে আন্দোলনে শামিল হন গ্রামের মানুষ। সেই সব বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একেবারে সামনের সারিতে দেখা গিয়েছিল বহু মহিলাকে। তাঁদের অভিযোগ ছিল, এলাকার কমবয়সি সুন্দরী মহিলাদের ‘আলাদা’ চোখে দেখতেন শাহজাহানের শাগরেদ শিবপ্রসাদ হাজরার বাহিনীর লোকেরা। জোর করে তাঁদের মিটিং-মিছিলে ডেকে নিয়ে যাওয়া তো বটেই, রাতের দিকেও বাড়িতে ডেকে পাঠানো হত। না গেলেই দেওয়া হত হুমকি। শ্লীলতাহানিরও অভিযোগ তুলেছিলেন মহিলাদের একাংশ। সেই সব অভিযোগ নিয়ে রাজ্য জুড়ে তো বটেই, এ বার জাতীয় স্তরেও সরব হয়েছেন বিরোধীরা। বিষয়টি নিয়ে সোমবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। সন্দেশখালির মহিলাদের সঙ্গে কী কী ঘটেছে, তা গোটা দেশের জানা উচিত বলেও মন্তব্য করেন স্মৃতি। সন্দেশখালিতে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। গিয়েছিল রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি দলও। চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, সন্দেশখালিতে তাঁরা এমন কোনও মহিলাকে পাননি যিনি শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছেন। তবে মহিলাদের রাতে ডেকে নিয়ে গিয়ে বাড়ির কাজ করানো হত বলে গ্রামবাসীরাই তাঁদের জানিয়েছেন বলে দাবি ছিল লীনার। একই দিনে সন্দেশখালির ঘটনাক্রম নিয়ে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মন্তব্য করেছেন রাজ্যপালের সন্দেশখালি সফর নিয়েও। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘যে যেখানে খুশি যেতেই পারেন। আমিও রাজ্য মহিলা কমিশনকে পাঠিয়েছিলাম। তারা রিপোর্ট দিয়েছে। আর যাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ, তাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ।’’ এর পর সন্ধ্যাতেই রাজ্য পুলিশের তরফে সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানানো হয়।
সেই ঘোষণার পর রাত কাটতে না কাটতেই সন্দেশখালি থানায় হাজির হলেন ডিআইজি সিআইডি সোমা। তাঁর নেতৃত্বের ১০ সদস্যের বিশেষ দল মহিলাদের তোলা বিভিন্ন অভিযোগ খতিয়ে দেখে তার তদন্ত করবেন। সোমার সঙ্গেই সন্দেশখালি থানাতে ঢুকতে দেখা যায় রাজ্য পুলিশের এসটিএফে কর্মরত আর এক আইপিএস তথা ডিআইজি পদমর্যাদার অফিসার দেবস্মিতা দাসকেও।