আলোচনা: বনগাঁয়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
এলাকা দিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই চলছে গরু পাচার। খেতের মধ্যে দিয়ে পাচারের গরু নিয়ে যাওয়ার ফলে নষ্ট হয় ধান, আনাজ। পাচারকারীরা এতটাই শক্তি ধরে, গ্রামের মানুষ টুঁ শব্দ করতে সাহস করেন না।
কিন্তু এ বার যখন পুলিশের পক্ষ থেকে গ্রামবাসীদের নিয়ে গরু পাচার বন্ধ করতে বৈঠক করে আশ্বাস দেওয়া হল, তখন ভয় সরিয়ে এগিয়ে এলেন গ্রামের কয়েকশো মহিলা। পুলিশের কাছে তাঁদের অঙ্গীকার, কোনও অবস্থাতেই এলাকায় দিয়ে আর গরু পাচার করতে দেবেন না।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বনগাঁ থানার পক্ষ থেকে স্থানীয় পুরাতন বনগাঁ এলাকায় গ্রামবাসীদের নিয়ে বৈঠক করা হয়। বলা হয়, গরু পাচার রুখতে সচেতন হতে হবে গ্রামের মানুষকে। কয়েকশো গ্রামবাসী উপস্থিত ছিলেন সেখানে। ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতারাও।
বনগাঁর আইসি সতীনাথ চট্টরাজ গ্রামবাসীদের আশ্বাস দেন, গরু পাচার রুখতে তৎপর হবে পুলিশও। কিন্তু গ্রামবাসীদের সহায়তা দরকার। বৈঠক শেষে মহিলারা আইসি ঘিরে ধরে জানান, তাঁরা আর কোনও অবস্থাতেই এলাকার দিয়ে গরু পাচার চলতে দেবেন না। প্রয়োজনে নিজেরাই গরু আটকে রাখে পুলিশকে খবর দেবেন। পুলিশ যেন সে সময়ে সহযোগিতা করে। সেই আশ্বাস দেন পুলিশ কর্তা। এলাকার যে সব পাচারকারী এখন জেলে আছে, তারা ফিরে এলেও যাতে ফের পাচার শুরু না করে, সে জন্যও মহিলার আশ্বাস দিয়েছেন।
মহিলাদের ওই ভূমিকায় আশার আলো দেখছেন পুলিশ কর্তারা। উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সীমান্ত এলাকার বড় সমস্যা গরু পাচার। ওই সমস্যা মেটাতে আমরা গ্রামবাসীদের সচেতন করতে বৈঠক করছি। আশা করছি, এ বার পাচার বন্ধে সফল হব।’’
বনগাঁ মহকুমার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে গরু পাচার দীর্ঘ দিনের সমস্যা। পুলিশি ধরপাকড় বাড়লে তা কোনও কোনও সময়ে কমে যায়। কিছু দিনের মধ্যে আবার মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশের পক্ষ থেকে গরু পাচার বন্ধ করে পদক্ষেপ করা হয়েছে। সীমান্ত গিয়ে গরু পাচার বন্ধ করতে বিএসএফ কর্তাদের সঙ্গে পুলিশ নিয়মিত বৈঠকও করছে। যৌথ তল্লাশিও শুরু হয়েছে। সীমান্তে নিয়মিত চলছে ধরপাকড়। তবে পুলিশও মনে করছে, পাচার কমলেও তা এখন পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। এক পুলিশ কর্তা জানালেন, গ্রামের মানুষ যদি এগিয়ে আসেন, তা হলে পাচার বন্ধ করা সম্ভব।