‘হানিট্র্যাপের’ অভিযোগে গ্রেফতার বিজেপি নেত্রীর মেয়ে। প্রতীকী ছবি।
যৌনতার ফাঁদ পেতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে লক্ষ লক্ষ টাকার প্রতারণা করার অভিযোগ উঠল বিজেপির এক নেত্রীর মেয়ের বিরুদ্ধে। ঘটনাচক্রে, বিজেপিরই এক নেতা ওই তরুণীর বিরুদ্ধে ‘হানিট্র্যাপের’ অভিযোগ তুলেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে এ রকম বেশ কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়ায় প্রিয়ঙ্কা রায় নামে ওই তরুণীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের হাড়োয়ার রাখালপল্লির ঘটনা। বছর ছাব্বিশের প্রিয়ঙ্কা হাড়োয়ায় বিজেপির মহিলা মোর্চা মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক নমিতা রায়ের মেয়ে। বৃহস্পতিবার তাঁকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে হাজির করিয়ে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রিয়ঙ্কার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে কথাবার্তা, ছবি আদান-প্রদান করে প্রতারণার ফাঁদ পাততেন তরুণী। তার পর তাঁদের বিরুদ্ধে কখনও ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা অভিযোগ তুলে লক্ষ লক্ষ টাকা দাবি করতেন। খোদ বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার নেতা রাজেন্দ্র সাহা এই অভিযোগ তুলেছেন। ২০১৯ সালের ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন রাজেন্দ্র। পুলিশের দাবি, রাজেন্দ্র ছাড়াও আরও বেশ কয়েক জন নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছিলেন প্রিয়ঙ্কা। উল্টো দিকে, তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণার ফাঁদ পাতার অভিযোগ আসছিল। স্বরূপনগর থানায় সম্প্রতি দায়ের হওয়া এ রকম একটি অভিযোগের তদন্তে নেমে প্রিয়ঙ্কাকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে বসিরহাট মহকুমা সাইবার ক্রাইম থানায় মামলা রুজু হয়েছে। রাজেন্দ্র বলেন, ‘‘বিজেপি নেত্রীর মেয়েই দলকে কালিমালিপ্ত করছে! শাসকবিরোধী সব দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। নেতাদের আত্মসম্মান নিয়ে খেলা করছে। দল দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিক।’’
পুলিশের দাবি, জেরায় প্রতারণার অভিযোগ স্বীকার করেছেন প্রিয়ঙ্কা। জানিয়েছেন, যৌনতার ফাঁদ পেতে নেতাদের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলেছেন। এর পিছনে বড় কোনও চক্র রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। নমিতার অবশ্য দাবি, তাঁর মেয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘চক্রান্ত করে ফাঁসানো হচ্ছে আমার মেয়েকে। আমার মেয়ে কারও থেকে কোনও টাকাপয়সা নেয়নি। সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ।’’
এই ঘটনা নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে শাসক তৃণমূল। বসিরহাটে দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র সভাপতি কৌশিক দত্ত বলেন, ‘‘খারাপ লোকজন, যারা তৃণমূলে জায়গা পায়নি, তারাই বিজেপি করে। বিজেপির নেতানেত্রীরাই এর সঙ্গে যুক্ত। প্রশাসন প্রশাসনের মতো কাজ করছে। তদন্তে আসল সত্য বেরিয়ে আসবে।’’