বুথ ফেরত সমীক্ষার ইঙ্গিত, ক্ষমতায় ফিরছে তৃণমূল। যদিও জোটের নেতারা সেই সমীক্ষাকে গুরুত্ব দিতেই নারাজ। যার দিকেই পাল্লা ভারী হোক, ডায়মন্ড হারবার মহকুমায় বুধবার পর্যন্ত আবিরের বাজার দখলে অনেক এগিয়ে রয়েছে সবুজ রঙ। দিন কয়েক আগে থেকেই বস্তা ভর্তি সবুজ আবির কিনে পার্টি অফিস এবং নিজেদের বাড়িতে মজুত করছেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তুলনায় লাল এবং গেরুয়া আবিরের বিক্রি অনেক কম বলে জানাচ্ছেন বিক্রেতাদের অনেকেই।
বুধবার দুপুরে মন্দিরবাজারের একটি আবির তৈরির কারখানায় গিয়ে দেখা গেল একের পর এক বস্তা বস্তায় ঢালা হচ্ছে সবুজ আবির। কর্মীরা জানালেন, প্রায় ২০ বছর ধরে এই কারখানায় আবির তৈরি হচ্ছে। আগে ভোট গণনার আগে লাল আবিরের চাহিদা থাকত। ২০১১ সাল থেকে লালকে টেক্কা দিয়েছে সবুজ আবির। এ বছর অনেকেই সবুজ আবিরের জন্য অগ্রিম বায়না দিয়ে গিয়েছেন। বুথ ফেরত সমীক্ষায় তৃণমূলের এগিয়ে থাকার পর থেকে বায়নার সংখ্যা আরও বেড়েছে। কর্মীরা জানান, এখনও পর্যন্ত ৪০ টন সবুজ আবির বিক্রি হয়েছে এই কারখানা থেকে। এখানে লাল এবং সবুজ দুই রঙের আবির বিকোচ্ছে বস্তা-পিছু আড়াইশো টাকায় (বস্তায় ২৬ কিলো আবির থাকে)। ডায়মন্ড হারবার, মন্দিরবাজার, কুলপি, জয়নগর, কুলতলি, ক্যানিং, গোসাবা, বাসন্তী ছাড়াও বজবজ, মহেশতলা এলাকা থেকেও তৃণমূল নেতারা এখানে এসে বস্তা-ভর্তি আবির কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
ডায়মন্ড হারবারের বিভিন্ন খুচরো এবং মুদিখানার দোকানেও সবুজ এবং লাল আবির মজুত রাখা হয়েছে। তবে গেরুয়া আবির নেই বললেই চলে। খুচরো আবির বিক্রেতারা জানালেন, বুধবার পর্যন্ত লাল আবিরের তেমন চাহিদা নেই। তবে ফল জোটের পক্ষে গেলে লাল আবিরের চাহিদা বাড়বেই। তাই লাল আবিরও মজুত করে রাখা হয়েছে। খুচরো আবির বিক্রেতা কানাই মণ্ডল, ধনঞ্জয় সাহারা জানালেন, দিন কয়েক আগেও সবুজের সঙ্গেই সমানে বিক্রি হচ্ছিল লাল আবির। কিন্তু বুথ ফেরত সমীক্ষার পরে সবুজ আবিরের বিক্রি অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের ভাইস চেয়ারম্যান শক্তি মণ্ডলের দাবি, ‘‘এ বারের নির্বাচন অনেক কঠিন ছিল। আমাদের কর্মীরা একে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন। সেই চ্যালেঞ্জ জয়ের উৎসবেই সবুজ আবিরের ব্যবহার হবে।’’ যদিও সবুজ আবিরের দেদার বিক্রিকে গুরুত্বই দিতে নারাজ সিপিএম। দলের জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বামপন্থী দলে আবির মজুত করার সংস্কৃতি কোনও দিনই ছিল না। আমরা এ সব নিয়ে ভাবছি না।’’