প্রতীকী ছবি।
রাতে মদ্যপ অবস্থায় হাসপাতালে ঢুকে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের নিগ্রহের অভিযোগে পুলিশ এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করল।
মঙ্গলবার রাতে গাইঘাটা থানার পুলিশ চাঁদপাড়া এলাকা থেকে সুজিত দে নামে ওই যুবককে ধরে। ধৃতকে বুধবার বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসক ও নার্সদের নিগ্রহের ঘটনাটি ঘটেছিল ১৪ জুন গভীর রাতে গাইঘাটার চাঁদপাড়া ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন গভীর রাতে সুজিত এবং তার ভাই অভিজিৎ তাদের এক অসুস্থ ভাইঝিকে চিকিৎসা করাতে চাঁদপাড়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। মেয়েটির শ্বাসকষ্ট ছিল। অভিযোগ, ওই সময় সুজিত ও অভিজিৎ কর্তব্যরত চিকিৎসক তথা মেডিক্যাল অফিসার মনোরঞ্জন বিশ্বাস এবং দু’জন নার্সের সঙ্গে অশোভন আচারণ করেন। তাঁদেরকে নিগ্রহ করা হয় বলেও অভিযোগ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে গাইঘাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ আগেই অভিজিতকে গ্রেফতার করেছিল। সুজিত এতদিন পলাতক ছিল। দিন কয়েক আগেই এনআরএসে এক চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ ওঠে রোগীর পরিবারের বিরুদ্ধে। সে জন্য বেশ কিছু দিন চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পালন করেন। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ওই কর্মবিরতি ওঠে। ফের এই ঘটনায় রীতিমতো চিকিৎসক ও নার্সেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাঁরা গাইঘাটার বিএমওএইচ তথা ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ভিক্টর সাহার কাছে নিরাপত্তার দাবি করেছেন। ভিক্টর বলেন, ‘‘রোগীকে সেদিন সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সুস্থ হয়ে রোগী রাতেই বাড়ি ফিরে গিয়েছিল। তবুও ওরা চিকিৎসক ও নার্সদের নিগ্রহ করেছে। পুলিশের কাছে রাতে হাসপাতালে আরও নিরাপত্তা জোরদার করতে আবেদন করা হয়েছে।’’হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, রোগীর শ্বাসকষ্ট থাকায় চিকিৎসক তাকে দ্রুত অক্সিজেন দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। কোনও কারণ ছাড়াই ওই দু’জন চিকিৎসকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতে থাকে। চিকিৎসকের মেবাইল কেড়ে নেয়। তাঁকে ধাক্কাধাক্কি করা হয়। নার্সরা ওয়ার্ডের মধ্যে রোগী দেখছিলেন। অভিযোগ, যুবকেরা মোবাইলে নার্সদের ছবি তুলছিল। তাঁরা আপত্তি করাতে নার্সদের ধাক্কা দেয় মদ্যপ ওই দুই যুবক। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন রাতে হাসপাতালে দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন। গাইঘাটা থানার তরফে বিএমওএইচকে জানানো হয়েছে এখন থেকে রাতে হাসপাতালে পাঁচজন করে সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হবে। বনগাঁর পুলিশ সুপার তরুণ হালদার বলেন, ‘‘হাসপাতালের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।’’