সমারোহ: মিত্র বাড়িতে।— ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল
বাড়ির পাশেই বহু প্রাচীন এক কাঁঠাল গাছ। পুজোর ঠিক আগেই ফল ধরে সেই গাছে। সন্ধিপুজোর নৈবেদ্যে সাজিয়ে দেওয়া হয় সেই ফল।
বহু বছর ধরে এ রকমই চলে আসছে জয়নগরের মিত্রবাড়ির পুজোয়। কিন্তু আশ্বিনে তো কাঁঠাল গাছে ফলন হওয়ার কথা নয়। মিত্রবাড়ির সদস্য সুমনা ঘোষ বলেন, ‘‘সেটাই তো আশ্চর্য। কী ভাবে এ সময়ে গাছে কাঁঠাল ধরে, আমরা কেউ জানি না। কিন্তু প্রতিবছর পুজোর আগে একটা, দু’টো এঁচোড় হবেই। সন্ধি পুজোর নৈবেদ্যে অন্যান্য ফলের সঙ্গে সেই এঁচোড় দেওয়াটাও রীতি।
জয়নগরের প্রাচীন বনেদি বাড়ির পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম এই মিত্র বাড়ির পুজো। প্রায় সাড়ে তিনশো বছরের পুরোনো। আজও সব আচার মেনে হয় পুজোর আয়োজন। বাড়ির এক সদস্যের কথায়, ‘‘একশো নারকেলের নাড়ু হয় পুজোর সময়ে। বাইরে থেকে কারিগর এনে নাড়ু বানানো হয়। সেই দৃশ্য দেখতে লোক জড়ো হয়ে যায়।’’
একচালার সাবেক প্রতিমাই হয় এ বাড়িতে। প্রাচীন ঠাকুরদালান প্রতি বছর নিয়ম করে রং হয় পুজোর আগে। সুমনা বলেন, ‘‘ঠাকুরের ভোগের আলাদা পিতলের বাসন আছে। পুজোর সময়ে সে সব বেরোয়। পুরনো আমলের সেই সব বাসনও দেখার মতো জিনিস।’’
বাড়ির লোকজন ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিয়েছেন নানা দিকে। কেউ কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকেন। কেউ থাকেন ভিরাজ্যে। তবে পুজোর সময়ে এক হন সকলে। পরিবারের সদশ্য কেশবচন্দ্র মিত্র বলেন, ‘‘কর্মসূত্রে রাজস্থানে থাকি। তবে পুজোর টানে এই সময়টা ফিরতেই হয়। বাড়ির পুজোর ঐতিহ্যই আলাদা।’’