ধৃত হাসানুর জামান খান। নিজস্ব চিত্র।
তামিলনাড়ুর এক ব্যবসায়ীকে প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে এক বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করেছে বসিরহাট থানার পুলিশ। শুক্রবার গভীর রাতে কলকাতার সিঁথির মোড়ের একটি আবাসন থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম হাসানুর জামান খান ওরফে মিলটন। তার বাড়ি বাংলাদেশের ঢাকায়। তার বিরুদ্ধে তামিলনাড়ুর গুন্টুরের এক ব্যবসায়ীর ৫টি ট্রাক ভর্তি লঙ্কা আত্মসাৎ করে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যার বর্তমান বাজারমূল্য ৯০ লক্ষ টাকার বেশি। ধৃতকে শনিবার বসিরহাটের এসিজেএম আদালতে প্রবীর মহাপাত্রের এজলাসে তোলা হলে বিচারক তার ৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্ত দিয়ে এ দেশে এসে তামিলনাড়ু যায় হাসানুর। সেখানকার এক লঙ্কা ব্যবসায়ীর সঙ্গে পরিচয় করে নিজেকে ঘোজাডাঙা সীমান্তের ভারতীয় এজেন্ট বলে পরিচয় দেয়। ওই ব্যবসায়ীকে হাসানুর জানায়, সে ৫টি ট্রাক ভর্তি লঙ্কা বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিতে পারবে। সেই মতো প্রথম ধাপে ওই ব্যবসায়ী তামিলনাড়ু থেকে নথিপত্র-সহ ৩টি ট্রাক ভর্তি লঙ্কা বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে পাঠান। অভিযোগ, নথি জাল করে ৩টি ট্রাকের লঙ্কা বাংলাদেশের অন্য ব্যবসায়ীকে বিক্রি করে দেয় হাসানুর। এর পর দ্বিতীয় ধাপে ওই ব্যবসায়ীর আরও দু’টি ট্রাক ভর্তি লঙ্কা বসিরহাটের ঘোজাডাঙায় আসে। সেই ট্রাক দু’টিকে ঘোজাডাঙা সীমান্ত থেকে স্বরূপনগর নিয়ে যায় হাসানুর। সেখানে লঙ্কা নামিয়ে সেগুলি অন্য কোম্পানির নামে বাংলাদেশে বিক্রি করে দেয়। ইতিমধ্যে তামিলনাড়ুর ওই ব্যবসায়ী বুঝতে পারেন যে তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এর পর গত ১৫ জুন ওই ব্যবসায়ীর সংস্থার পক্ষ থেকে বসিরহাট থানায় হাসানুরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করা হয়।
তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, লঙ্কা বিক্রি করে বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়েছিল মিলটন। তাই তার খোঁজ মিলছিল না। সম্প্রতি জানা যায়, হাসানুর মাঝে মধ্যেই বনগাঁর পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে এসে ব্যবসায়ীদের ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে পালায়। একটি সূত্রে খবর পেয়ে বসিরহাট থানার পুলিশ অফিসার কার্তিক অধিকারীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল দমদমের সিঁথির মোড়ের একটি আবাসনে তল্লাশি চালিয়ে হাসানুর জামান খান ওরফে মিলটনকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ জানিয়েছে, দিন তিনেক আগেই পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে এসেছিল হাসানুর। তার সঙ্গে আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না খতিয়ে দেখছে পুলিশ।