২২টি ওয়ার্ডের জন্য বিজেপির পক্ষ থেকে ২৩ জন প্রার্থীর মনোনয়ন জমা দেওয়া হল বনগাঁয়। ২২ নম্বর ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থী হিসাবে রীতা রায় ও আরতি সিকদার দু’জনেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। এর ফলে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব প্রকাশ্যে চলে এসেছে। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, একজনের প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করা হবে। কিন্তু এমনটা হল কেন? কোনও সদুত্তর নেই নেতাদের কাছে। জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব হালদার বলেন, “দ্রুত আমরা আলোচনায় বসে বিষয়টির নিস্পত্তি করব।’
বুধবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়ে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতা কেডি বিশ্বাস, বনগাঁ শহরের দলীয় সভাপতি অপূর্ব রাহা, মধু মণ্ডল ও স্বপন মজুমদার। বাকি প্রার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সুকুমার দেবনাথ। তিনি ওই ওয়ার্ড থেকে অতীতে দু’বার জয়ী কংগ্রেসের কাউন্সিলর হয়েছিলেন। পরে তৃণমূল করতেন। লোকসভার উপনির্বাচনের আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও বর্তমানে আইনজীবী সুকুমারবাবু এলাকায় পরিচিত মুখ। তাঁর কথায়, “ওয়ার্ডের একমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনও শৌচাগার নেই। উন্নয়নের চেহারা কী, বোঝাই যাচ্ছে।”
নতুন প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী রথীন্দ্রনাথ হালদার, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা মণ্ডল। প্রিয়াঙ্কা বলেন, “এই প্রথম ভোটে দাঁড়িয়েছি। পরিবারের সকলে উত্সাহ দিচ্ছেন।” ২৩ জনের মধ্যে নতুন মুখ ২১ জনই। বাকি এক জন হলেন ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মীরা দে। তিনি যদিও ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা নন। তবে অতীতে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন।
অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার ২৩ ওয়ার্ডেই প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি। দলীয় সূত্রের খবর, নতুন মুখ এখানে ১১ জন। উল্লেখযোগ্য প্রার্থীর মধ্যে আছেন রাজ্য বিজেপির মহিলা মোর্চার সম্পাদক তনুজা চক্রবর্তী। তিনি ৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দাঁড়িয়েছেন। এ ছাড়া, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক অশোক দে। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান চেয়ারম্যান তৃণমূলের সমীর দত্তের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য দফতরের কর্মী ননীগোপাল ভট্টচার্য।
গোবরডাঙা পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডেই বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে। ৮ জন নতুন মুখ। এখানে উল্লেখ্যযোগ্য ঘটনা হল, জেলা বিজেপির সহ সভাপতি জগদীশ সরকারকে প্রার্থী করেনি দল। যদিও তিনি ১১ নম্বর ওয়ার্ডে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। দলীয় সূত্রের খবর, লোকসভার উপনির্বাচনে প্রার্থী সুব্রত ঠাকুরের বিরোধিতা করাতেই রাজ্য কমিটি তাঁকে প্রার্থী করেনি। জগদীশবাবুর অনুগামীদের দাবি, স্থানীয় ও রাজ্য নেতৃত্ব চক্রান্ত করে তাঁকে প্রার্থী হতে দেয়নি।
নির্দল প্রার্থী তৃণমূল নেতা। টিকিট না পেয়ে বীরনগর পুরভোটে তৃণমূলের দু’জন কাউন্সিলর-সহ আট জন তৃনমূল কর্মী নির্দল হিসেবে বুধবার মনোনয়নপত্র জমা দিলেন। ১৪ ওয়ার্ডের বীরনগর পুরসভা তৃণমূলের দখলে রয়েছে। পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান ও বর্তমান সদস্য তৃণমূলের নন্দদুলাল রায়কে দল এ বার টিকিট দেয়নি। তাই তিনি নির্দল হিসেবে এ দিন মনোনয়নপত্র জমা দেন। এছাড়াও তিনি দলের অন্যান্য বিক্ষুব্ধদেরও নির্দল প্রার্থী হতে উত্সাহ দেন বলে জানা গিয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা এলাকার পুরনো তৃণমূল কর্মী। তিন জন কাউন্সিলরকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। পরিবর্তে গুরুত্বহীন লোকজনকে প্রার্থী করা হয়েছে। তাই আমরা দলের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছি।” রানাঘাট উত্তর-পশ্চিমের বিধায়ক পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওঁরা আমাকে পুনরায় প্রার্থী হওয়ার হচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন। বিষয়টি দলের উচ্চ নেতৃত্বকে জানাই। তারপর যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার দলই নিয়েছি।”