মহকুমা প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জোয়ারে নদীর জল বাড়ায় সুন্দরবন এলাকার কোথাও বাঁধ ধসে, কোথাও আবার বাঁধ ছাপিয়ে গ্রামের মধ্যে নোনা জল ঢুকেছে। হিঙ্গলগঞ্জ ব্লক দফতরের পাশে মালোপাড়ায় ইছামতী নদীতে বড় আকারে ভাঙন দেখা দিয়েছে। তা দেখিয়ে মালোপাড়ার রামকৃষ্ণ বিশ্বাস, প্রবীর হালদার, উর্মিলা হালদার, ইলা হালদার বললেন, ‘‘এখানে দেড়শোর উপর পরিবার বাস করে। নদীর প্রায় দুশো ফুট বাঁধ বসে গিয়েছে। বহু দিন আগে একবার কাজ করা হলেও পরে তা আর মেরামত করা হয়নি।’’ যে ভাবে ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি হচ্ছে তাতে যে কোনও মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে যেতে পারে, আশঙ্কা তাঁদের।
হিঙ্গলগঞ্জের যোগেশগঞ্জ এলাকার শ্রীধরকাটি, সর্দারপাড়া, মাধবকাটি, কানাইকাটি, দিঘিরপাড়া, সরুপকাটি, সাহেবখালি এলাকাতে কালিন্দী নদীর বাঁধে ধস নামে। চাষের জমি ভেসে গিয়েছে, কোথাও খারাপ স্লুইস গেটের জন্য নোনা জল জমিতে ঢুকছে। ঝড়-বৃষ্টির জেরে রাতের দিকে বাঁধের ধস বড় আকার নিতে পারে, মনে করছেন বাসিন্দারা।
বেড়মজুর ১ নম্বর গাজিখালিতে ছোট কলাগাছি নদীর বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফাটল দেখা দিয়েছে কালীনগর মসজিদ বাড়ি এবং ঘোষপুর এলাকায় বেতনী নদীর বাঁধেও। আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা রাত জেগে বাঁধ মেরামতি করেছেন। স্বরূপনগরের তিনটি পঞ্চায়েত এলাকায় বেশ কিছু দিন ধরে জল থই থই অবস্থা। তার উপর নতুন করে বৃষ্টি শুরু হওয়ার বন্যার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। পদ্মা, যমুনা এবং কঙ্কনা বাওড় ছাপিয়ে নোনা জল ঢুকে পড়েছে স্বরূপনগরের চারঘাট, শগুনা এবং তেপুল-মির্জাপুর পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কিছু গ্রামে। মহকুমা প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দারা মিলিত ভাবে মাটির বস্তা ফেলে নদী বাঁধ উঁচু করার চেষ্টা করেছেন। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যে ৩০০-র বেশি ঘর পড়ে গিয়েছে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনাইটেড ফিশারমেন অ্যাসোসিয়েশনের নেতা বিজন মাইতি বলেন, ‘‘ঝড়ের পূর্বভাসের জন্য ট্রলার ছোট খালগুলিতে এনে রাখা হয়েছে। খারাপ আবহাওয়ার জন্য গত ৬ দিন ধরে মাছ ধরা যাচ্ছে না।’’ আগামী ৩ দিন সমুদ্রে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৎস্য দফতর।