পুলিশ সেজে ঢুকে হামলা ক্যানিংয়ে, গ্রেফতার ৫

রাত তখন ১০টা। খাওয়া-দাওয়া সেরে শোওয়ার তোড়জোড় শুরু করছে বাড়ির লোকজন। হঠাৎ দরজায় ঠকঠক আওয়াজ। কে, জানতে চাওয়ায় ও পাড় থেকে গম্ভীর কণ্ঠে উত্তর আসে, ‘‘দরজা খুলুন। লালবাজার থেকে এসেছি।’’ আত্মারাম খাঁচাছাড়া হওয়ার জোগাড় বাড়ির লোকজনের। রাতবিরেতে দরজায় পুলিশ এসে দাঁড়ালে কারই বা বুক কাঁপবে না!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ক্যানিং শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৫ ০০:০৫
Share:

রাত তখন ১০টা। খাওয়া-দাওয়া সেরে শোওয়ার তোড়জোড় শুরু করছে বাড়ির লোকজন। হঠাৎ দরজায় ঠকঠক আওয়াজ। কে, জানতে চাওয়ায় ও পাড় থেকে গম্ভীর কণ্ঠে উত্তর আসে, ‘‘দরজা খুলুন। লালবাজার থেকে এসেছি।’’ আত্মারাম খাঁচাছাড়া হওয়ার জোগাড় বাড়ির লোকজনের। রাতবিরেতে দরজায় পুলিশ এসে দাঁড়ালে কারই বা বুক কাঁপবে না! ভয়ে ভয়ে দরজা খোলেন গৃহকর্তার কুড়ি বছরের ছেলে। তাঁকে ঠেলে সরিয়ে ঢুকে পড়ে জনা পাঁচেক লোক। শুরু হয় হম্বিতম্বি। এক জন ‘পুলিশ’ বলে, ‘‘তোর বাবাকে ডাক। লোকের টাকা না দিয়ে লুকিয়ে থাকা। থানায় ধরে নিয়ে গিয়ে মজা দেখাব।’’ শনিবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলার পিয়ালির এই ঘটনায় হতভম্ব হয়ে যান দিলীপ হাওলাদারের পরিবার।

Advertisement

সে সময়ে বাড়িতে ছিলেন না দিলীপবাবু। তাঁকে বাড়িতে না পেয়ে ছেলে মিঠুনকে মারধর করে ‘পুলিশ’। বাড়ির মেয়েদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করে বলেও অভিযোগ। পুলিশের এ হেন চোটপাট দেখে এক সময়ে সন্দেহ হয় বাড়ির লোকের। চিৎকার শুরু করেন তাঁরা। চলে আসেন প্রতিবেশীরা। তাঁদের প্রশ্নের মুখে পড়ে পাঁচ আগন্তুককে আমতা আমতা করতে দেখে সন্দেহ আরও গাঢ় হয়। ফোনে খবর দেওয়া হয় জীবনতলা থানায়। থানা থেকে পুলিশ এসে ওই পাঁচ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তত ক্ষণে অবশ্য আগন্তুকদের সেই তেজ উধাও। তারা জানায়, খোওয়া যাওয়া টাকা উদ্ধার করতে পুলিশ পরিচয় দিয়ে এসেছিল সকলে। মিঠুনের অভিযোগের ভিত্তিতে বিবেকানন্দ ভাণ্ডারী, রাজকুমার পাইক, সোনা প্রামাণিক, চন্দ্রশেখর মণ্ডল ও সুদর্শন মণ্ডল নামে ওই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বাড়ি গড়ফা থানার শ্রীহরিপল্লি ও কালীকাপুরে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দিলীপ হাওলাদার জমি কেনাবেচার কাজ করেন। তিনি একটি জমি বিক্রি করবেন বলে ধৃতদের কাছ থেকে সাত লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন বলে ধৃতদের দাবি। কিন্তু দিলীপবাবু সেই টাকা ফেরত দিচ্ছিলেন না বলে অভিযোগ। জমিও দিচ্ছিলেন না। ধৃতদের দিলীপবাবু চিনলেও বাড়ির অন্য কেউ চিনতেন না। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি গাড়ি করে ওই পাঁচ জন দিলীপবাবুর বাড়িতে এসে নিজেদের ‘লালবাজারের পুলিশ’ বলে পরিচয় দেয়। দিলীপবাবুর ভাই সমীর হাওলাদার বলেন, ‘‘নকল পুলিশরা মদ্যপ অবস্থায় ছিল। আমার ভাইপোকে ওই ভাবে মারধর করায় সন্দেহ হয়। তখনই পুলিশে খবর দিই।’’ দিলীপবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। সমীরবাবু জানিয়েছেন, দিলীপবাবু টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছেন। তারপরেও বাড়িতে ঢুকে এ ভাবে হামলা চালালো ওই পাঁচ জন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement