নজর দুর্বল বাঁধে, ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় জোরকদমে প্রস্ততি
Cyclone Sitrang

শনিবারের মধ্যে মৎস্যজীবীদের নিরাপদ জায়গায় ফেরার নির্দেশ

শুক্রবার দুপুরে সাগরের বিডিও অফিসে সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা প্রস্তুতি বৈঠক করেন। ইতিমধ্যে দুর্যোগ মোকাবিলায় একাধিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২২ ০৮:৩৭
Share:

সতর্কতার প্রচার। সুন্দরবনের নদী সংলগ্ন এলাকায়। নিজস্ব চিত্র।

দুর্গাপুজোয় দুই জেলায় বেশ কিছু এলাকা ভারী বৃষ্টির কবলে পড়েছিল। কালীপুজোর সময়ে ঘূর্ণিঝড়ের জেরে ফের ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, সমুদ্রে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় সুপার সাইক্লোনে পরিণত হবে না। সুপার সাইক্লোনে ঝড়ের বেগ প্রতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটারেরও বেশি হয়। এক্ষেত্রে হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০-১০০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। স্থলভাগে ঘূর্ণিঝড় ঢুকলে তা গতি হারিয়ে ঘণ্টায় ৭০-৮০ কিলোমিটার হতে পারে। তবে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা আছে বলে প্রশাসনিক কর্তাদের জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। আরও খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা লাগোয়া সুন্দরবনে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। পরে বাংলাদেশের দিকে ঘুরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রভাবে দুর্যোগের কবলে পড়বে মূলত দুই ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর। সেই মতো প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।

Advertisement

শুক্রবার দুপুরে সাগরের বিডিও অফিসে সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা প্রস্তুতি বৈঠক করেন। ইতিমধ্যে দুর্যোগ মোকাবিলায় একাধিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী জানান, শনিবার রাতের মধ্যে সমস্ত মৎস্যজীবীকে নিরাপদ স্থানে ফিরে আসতে হবে। রবিবার থেকে সমুদ্রে যাওয়া বন্ধ থাকবে। সুন্দরবনের মৎস্যবন্দর ও ঘাটগুলিতে এ বিষয়ে মাইকে প্রচার শুরু হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশ নদীপথে মাইকে প্রচার চালাচ্ছে। সুন্দরবনের দুর্বল ও বেহাল বাঁধগুলি দ্রুত মেরামতির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেচ দফতরকে। কালীপুজোর আয়োজকদের কম উচ্চতার শক্তপোক্ত মণ্ডপ করতে বলা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলাস্তরে ২৪ ঘণ্টা কন্ট্রোলরুম খোলা থাকবে। সুন্দরবনে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলার কর্মীদের সঙ্গে সব ব্লকে সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরাও মোতায়েন থাকবেন। জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা জানান, ব্লকগুলিতে পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে ঘোড়ামারা ও মৌসুনি দ্বীপ এলাকা থেকে বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে আনা হবে।

দুর্য়োগের প্রস্তুতি হিসেবে হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি ১, ২ ও হাসনাবাদ ব্লকের তরফে বিভিন্ন পদক্ষেপ করা হয়েছে। সন্দেশখালি ২ ব্লকের বিডিও অর্ণব মুখোপাধ্যায় জানান, ব্লক জুড়ে নদীবাঁধের অবস্থা খতিয়ে দেখে সেচ দফতরকে জানানো হয়েছে। এই ব্লকে একাধিকবার বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তবে আপাতত বাঁধের অবস্থা তুলনায় ভাল বলে দাবি ব্লক প্রশাসনের। সন্দেশখালি ১ ব্লকের বিডিও সুপ্রতিম আচার্য জানান, ব্লক জুড়ে সমস্ত প্রধান ও অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করে বিভিন্ন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শনিবার থেকে বিডিও অফিসে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হবে। বিপর্যয় মোকাবিলার বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ঠিক আছে কি না দেখা হবে। পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রচার শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। হিঙ্গলগঞ্জের বিডিও শাশ্বতপ্রকাশ লাহিড়ী জানান, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রগুলিকে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। ত্রাণ সামগ্রী মজুত রয়েছে। হাসনাবাদ ব্লক প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে দুর্যোগের মোকাবিলায় সমস্তরকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement