হেনস্থার অভিযোগ মৎস্যজীবীর

বেশির ভাগ মৎস্যজীবীই যে এখনও পরিচয়পত্র পাননি, সে কথা মেনে নিয়েছেন কাকদ্বীপ ফিশারম্যান ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতি। 

Advertisement

দিলীপ নস্কর

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৮ ০৮:৪০
Share:

বছর পঞ্চাশের অভিরাম দাস কুড়ি বছর ধরে মাছ ধরে সংসার চালাচ্ছেন। ইলিশের মরসুমে ব্যস্ততা বাড়ে তাঁর। ট্রলারে করে গভীর সমুদ্রে যান। কিন্তু বছরখানেক ধরে ‘মৎস্যজীবী’ পরিচয়পত্রের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করেও তা পাচ্ছেন না বলে জানালেন।

Advertisement

অভিরামের মতোই অবস্থা দশরথ দাস, শিবশঙ্কর দাসদের। সকলের দাবি, মৎস্য দফতরের সমস্ত নিয়ম মেনে নথিপত্র জমা করলেও বছর ঘুরতে চলল, এখনও পরিচয়পত্র হাতে পাননি। ফলে সমুদ্রে মাছ ধরতে বেরিয়ে প্রতিনিয়ত উপকূলরক্ষী বাহিনীর জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে।

মৎস্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ফি বছর ইলিশের মরসুমে ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা, নামখানা, সাগর, রায়দিঘি ও কুলতলি এলাকার বিভিন্ন মৎস্য বন্দর থেকে প্রায় দেড়-দু’হাজার ট্রলার গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়। প্রতিটি ট্রলারে মৎস্যজীবী থাকেন জনা পনেরো বা তার বেশি। এই হাজার হাজার মৎস্যজীবীর অনেকেরই এখনও পরিচয়পত্র নেই বলে অভিযোগ। যার ফলে কখনও বাংলাদেশি উপকূলরক্ষী, কখনও ভারতীয় উপকূলরক্ষীদের হাতে হেনস্থা হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। পরিচয়পত্র দেখাতে না পারলে নানা ভাবে হয়রান হতে হচ্ছে বলে জানালেন মৎস্যজীবীরা। অনেককে আটকও করা হচ্ছে।

Advertisement

বেশির ভাগ মৎস্যজীবীই যে এখনও পরিচয়পত্র পাননি, সে কথা মেনে নিয়েছেন কাকদ্বীপ ফিশারম্যান ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতি।

এ বিষয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সহ মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) সুরজিৎ বাগ বলেন, ‘‘মাছের মরসুম ছাড়া পরিচয়পত্র দেওয়া হয় না। ফলে কম সময়ের মধ্যে সকলকে তা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে সারা বছর ধরে যাতে পরিচয়পত্র দেওয়া যায়, সে জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে যৌথ ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’’

সমস্যা আছে আরও।

গভীর সমুদ্রে যে সব মৎস্যজীবী যান, তাঁদের ট্রলারে লাইফ জ্যাকেট থাকা বাধ্যতামূলক হলেও সেই জ্যাকেট মিলছে না বলেও অভিযোগ উঠছে। মাঝ সমুদ্রে বিপদ-আপদ ঘটলে তেলের ড্রাম ধরে ভাসা ছাড়া গতি নেই। ক’দিন আগে কেঁদো দ্বীপের কাছে ট্রলার দুর্ঘটনায় ডুবে যাওয়া ১০ জ‌ন মৎস্যজীবীর মধ্যে ৩ জন মৎস্যজীবী দেহ উদ্ধার হয়েছে। বাকি ৭ জনের এখনও পর্যন্ত হদিস পাওয়া যায়নি। লাইফ জ্যাকেট থাকলে হয় তো প্রাণ সুরক্ষিত থাকত, মত অভিজ্ঞ মৎস্যজীবীদের।

মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তার জন্য লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা করবে ট্রলার মালিকই, জানিয়েছেন মৎস্য দফতরের অধিকর্তা সুরজিৎ। বিজন মাইতি বলেন, ‘‘প্রতিটি ট্রলারের মৎস্যজীবীদের লাইফ জ্যাকেট দেওয়া হচ্ছে। তবুও অনেকে যদি না পেয়ে থাকেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement