বিপজ্জনক: প্লাস্টিকের ছাউনি যে কোনও সময়ে পুড়তে পারে। ছবি: সুজিত দুয়ারি
ফের আগুন লাগল অশোকনগরের গোলবাজারে। গত দু’বছরে এই নিয়ে এগারো বার!
শনিবার গভীর রাতে আগুন লেগে পুড়েছে একটি মিষ্টির দোকান। দমকল ও ব্যবসায়ীরা জল ঢেলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। গোলবাজার ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, ফ্রিজে শর্ট সার্কিট হয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল। গোলবাজারে এ ভাবে দোকান ভস্মীভূত হওয়ার ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’বছরের মধ্যে এই নিয়ে এগারো বার আগুন লাগল এখানে। এরপরেও বাজারের পরিকাঠামোর উন্নতি হয়নি। ভিতরটা এমনই ঘিঞ্জি যে, আগুন লাগলে দমকলের গাড়ি ঢুকতে পারে না। শনিবার রাতেও দমকলের গাড়ি দূরে রেখে পাইপ লাগিয়ে জল এনে ঢালতে হয়েছিল। বড়সড় আগুন লাগলে পরিস্থিতি কী হবে, ভেবে আতঙ্কিত ব্যবসায়ীরা।
অস্থায়ী দোকানগুলির উপরে পর পর পলিথিনের ছাউনি। নীচ দিয়ে বিপজ্জনক ভাবে টানা হয়েছে বিদ্যুতের তার। কিছু ফলওয়ালা, মুদি, আনাজওয়ালার দোকানের মালপত্র দোকান ছাড়িয়ে কোনও কোনও জায়গায় রাস্তার উপরে চলে এসেছে। সেখান দিয়ে যাতায়াত কার্যত অসম্ভব। রেস্তোরাঁ, চায়ের দোকানে কাঠ ও গ্যাস জ্বালিয়ে চলছে রান্না, বানানো হচ্ছে চা-জলখাবার। চারিদিকে যত্রতত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে প্লাস্টিক, থার্মোকল-সহ দাহ্য নানা জিনিসপত্র। কিছু বিক্রেতা প্রকাশ্যেই প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগে মালপত্র দিচ্ছেন ক্রেতাদের। চলছে রান্না। কোথাও কোথাও বিদ্যুতের খুঁটি থেকে তার বেরিয়ে রয়েছে। এক কথায়, গোলবাজার যেন জতুগৃহে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারাও জানালেন, বিপদের আশঙ্কা মাথায় নিয়েই নিত্য বাজারে যেতে হয় তাঁদের।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, অতীতে একের পর এক ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনা ঘটলেও বাজার সমিতি প্লাস্টিকের ছাউনি সরাতে কোনও পদক্ষেপই করেনি।
গোলবাজার ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, বাজারে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে দোকানঘর রয়েছে প্রায় ১২০০টি। রোজ কয়েক হাজার মানুষ বাজারে আসেন। আগুন লাগলে বাজারে দমকলের পক্ষে ঢোকা যে কঠিন সে কথা তাঁরাও স্বীকার করছেন। সমিতির সম্পাদক গুপি মজুমদার বলেন, ‘‘প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বন্ধ করতে এবং শর্টসার্কিট নিয়ে ব্যবসায়ীদের সচেতন করতে শিবির করা হবে। পুরসভার কাছে দোকানগুলির উপরে টিনের ছাউনি দেওয়ার জন্য আবেদন করব।’’
অশোকনগর-কল্যাণগড়ের পুরপ্রধান প্রবোধ সরকার বলেন, ‘‘ওই বাজারের পরিকাঠামো ঢেলে সাজতে পদক্ষেপ করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের ইঞ্জিনিয়ররা ইতিমধ্যেই বাজারে সমীক্ষা করে ম্যাপ তৈরি করেছেন। নতুন করে বিল্ডিংও তৈরি করা হবে।’’ প্লাস্টিকের বিষয়েও পদক্ষেপ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন পুরপ্রধান।