চালু হওয়ার অপেক্ষায় পলতাঘাট জেটি। নিজস্ব চিত্র
প্রায় তিন বছর বন্ধ রয়েছে ফেরি চলাচল। অবশেষে আগামী বছরের শুরুতে চালু হতে চলেছে চাঁপদানির পলতাঘাট এবং উত্তর ২৪ পরগনার ইছাপুরের মধ্যে নদীপথে যাত্রী পারাপার। দু’পাড়েরই স্থায়ী জেটি নির্মাণের কাজ এখন শেষ পর্যায়ে।
২০১৭ সালের এপ্রিলে গঙ্গার জোয়ারের ধাক্কায় ভদ্রেশ্বরের তেলেনিপাড়া জেটি দুর্ঘটনায় বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছিল। তার জেরে নড়ে বসে রাজ্য পরিবহণ দফতর। রাজ্যের সমস্ত অস্থায়ী জেটিঘাট নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। যাত্রী সুরক্ষার জন্য অস্থায়ী জেটিঘাটগুলি দিয়ে ফেরি পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার মধ্যে রয়েছে পলতাঘাট ও ইছাপুর ঘাটও। পরিবর্তে সব অস্থায়ী জেটিঘাটে স্থায়ী জেটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়।
চাঁপদানি পুরসভা সূত্রের খবর, পলতাঘাটে স্থায়ী জেটি তৈরির জন্য রাজ্য পরিবহণ দফতরে আবেদন জানানো হয়েছিল। সেই আবেদন মঞ্জুর হয়। ওই দফতরের দেওয়া চার কোটি টাকায় নতুন স্থায়ী জেটি নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের শেষ দিকে। বর্তমানে সেই কাজ ৯০ শতাংশই শেষ হয়ে গিয়েছে। বাকি কাজ আগামী কিছু দিনের মধ্যে শেষ করা হবে। উল্টো দিকে, ইছাপুরেও স্থায়ী জেটি নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার মুখে।
চাঁপদানির পুরপ্রধান সুরেশ মিশ্র বলেন, ‘‘এতদিন দু’পাড়ের ওই ঘাট দু’টি বন্ধ থাকায় স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী থেকে জুটমিল শ্রমিক— বহু মানুষের অসুবিধে হচ্ছে। তাঁদের ঘুরপথে যেতে হচ্ছে। এ পাড়ের জেটির কাজ প্রায় শেষ। ও পাড়েও পুরোদমে কাজ হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী বছরের গোড়াতেই নতুন জেটির মাধ্যমে যাত্রী পারাপার শুরু হয়ে যাবে।’’
তেলেনিপাড়া ঘাটে স্থায়ী জেটি নির্মাণ করে যাত্রী পারাপার শুরু হয়েছে বেশ কিছুদিন আগেই। কিন্তু পলতাঘাট বন্ধ থাকায় বহু যাত্রী এবং স্কুল-কেলেজের পড়ুয়াদের অসুবিধেয় পড়তে হচ্ছে প্রতিদিন। চাঁপদানি এলাকায় জুটমিল রয়েছে। ইছাপুরও শিল্পাঞ্চল। ফলে, দু’দিকেই শ্রমিকদের যাতায়াত রয়েছে। কিন্তু ঘাট দু’টি বন্ধ থাকায় তাঁদের ঘুরপথে, বাড়তি খরচ করে যেতে হচ্ছে। বন্ধ হওয়ার আগে পলতাঘাটে বাঁশের সাঁকো দিয়ে গঙ্গাবক্ষে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ মিটার গিয়ে তবে ভুটভুটিতে উঠতে হত। ঝুঁকি থাকলেও যাতায়াতের সুবিধার জন্য বহু যাত্রী ওই পথই ধরতেন।
এ বার স্থায়ী জেটি শীঘ্রই চালু হবে শুনে স্বস্তি পেয়েছেন অনেকে। তাঁদের মধ্যে রয়েছে স্কুলছাত্রী সুদেষ্ণা চৌধুরীও। চাঁপদানির বাসিন্দা হলেও সে পড়ে ইছাপুরের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে। তার কথায়, ‘‘ঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্কুলে যেতে খুব সমস্যা হচ্ছে। অনেকটা সময় হাতে নিয়ে বেরোতে হয়। অনেক সময় দেরিও হয়ে যায় স্কুলে পৌঁছতে। পলতাঘাট জেটি চালু হলে আর কষ্ট করতে হবে না।’’