বৃষ্টির অভাবে ভাঙড়ের সাতুলিয়া এলাকায় এ ভাবেই নষ্ট হচ্ছে আনাজ। নিজস্ব চিত্র
তীব্র গরম এবং প্রখর রোদে ঝলসে যাচ্ছে খেতের আনাজ। বড়সড় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন আনাজ চাষিরা। আরও অনুমান, আগামিদিনে বাজারে কয়েকগুণ বাড়তে পারে আনাজের দাম।
ভাঙড়-সহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় এই সময়ে প্রচুর পরিমাণে গ্রীষ্মকালীন আনাজের চাষ হয়েছে। চাষিরা জানান, অন্যান্য বার এত দিনে একাধিক কালবৈশাখী হয়। কিন্তু এ বছর এখনও সে ভাবে ঝড়-বৃষ্টি হয়নি। তার উপরে সপ্তাহখানেক ধরে অতিরিক্ত গরম পড়েছে। প্রখর রোদে মাটি ফেটে যাচ্ছে। ঝলসে যাচ্ছে আনাজ। লাউ, কুমড়ো, লঙ্কা, পটল, উচ্ছে, ঝিঙে, বেগুন-সহ বিভিন্ন আনাজের গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি না হওয়ায় ভূগর্ভস্থ জল সেচ করে জমিতে দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন চাষিরা। কিন্তু তাতেও লাভ হচ্ছে না। উল্টে জল সেচ করার ফলে গাছের গোড়ায় পচন ধরছে।
সাতুলিয়া গ্রামের চাষি নাসিরুদ্দিন মোল্লা বলেন, “বৃষ্টি না হওয়ায় গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। পাতা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। সেচের জল দিলে গরম, রোদে গাছের গোড়া পচে যাচ্ছে।” জামালউদ্দিন মোল্লা নামে এক চাষি বলেন, “বৃষ্টি না হওয়ার কারণে এবং প্রচণ্ড রোদে সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ রকম চলতে থাকলে বাজারে আনাজের দাম আগুন হয়ে যাবে।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা উদ্যানপালন দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর কৌশিক চক্রবর্তী বলেন, “এটা ঠিক যে বৃষ্টি না হওয়ায় আনাজের ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে চাষিরা সন্ধেবেলায় সেচের জল দিলে কিছুটা উপকার পেতে পারেন। যা পরিস্থিতি, তাতে দিনের বেলায় রোদের মধ্যে একেবারেই সেচের জল দেওয়া যাবে না।”
বৃষ্টি না হওয়ায় ধান, আম, লিচু চাষেও ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। চাষিরা জানান, টানা বৃষ্টি না হওয়ায় বোরো ধানে ‘নেক ব্লাস্ট’ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বেশিরভাগ ধানের শিষ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জেলা কৃষি দফতর সূত্রের খবর, এটি একটি ছত্রাকঘটিত রোগ। প্রতিকার পেতে টেবুকোনাজল ৫০ শতাংশ, ট্রাইফ্লক্সিস্ট্রবইন ২৫ শতাংশ, ডব্লিউ জি ০.৪ গ্রাম প্রতি লিটার জল গুলে স্প্রে করতে হবে।