অকালে আম ঝরে যাওয়ায় ভাঙড়ে পেড়ে ফেলা হচ্ছে কাঁচা আম। ছবি: সামসুল হুদা ।
একে ফলন কম, তার উপরে তীব্র গরমে ঝরে যাচ্ছে আম। চাষিদের অভিযোগ, রাসায়নিক স্প্রে করেও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। যেটুকু ফলন হয়েছিল, তা-ও বৃষ্টি না হওয়ার কারণে অকালে ঝরে যাচ্ছে। এর ফলে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে বাগান লিজ়ে নিয়ে আম চাষিরা সমস্যায় পড়েছেন। চাহিদা অনুযায়ী বাজারের কাঁচা আমের জোগানও নেই। হতাশ জনতা। আম চাষিরা জানাচ্ছেন, এই সময়ে বৃষ্টি না হলে আমের বোঁটা শক্ত হবে না। আম ঝরে যাবে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়, ক্যানিং, জয়নগর, কুলতলি, বারুইপুর, সোনারপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় কয়েক হাজার আম বাগান রয়েছে। এর মধ্যে ভাঙড় ১ ও ২ ব্লকের ১৯টি পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় পাঁচশো হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়।
বিশেষ করে ভাঙড়ের হিমসাগর, ম্যাড্রাস, ল্যাংড়া, আম্রপালি, কাঁচামিঠা, ফজলি, গোলাপখাস সহ বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু আমের ভাল চাহিদা রয়েছে কলকাতা এবং রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে। কিন্তু ফলন ভাল হয়নি। ভাঙড়ের বিভিন্ন বাজারে কাঁচা আম প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১২০ টাকা করে।
আম চাষি সাদা বাবু মোল্লা বলেন, ‘‘এক লক্ষ আশি হাজার টাকা দিয়ে চারটি আমবাগান কিনেছি। কিন্তু আশানুরূপ ফলন হয়নি। যেটুকু ফলন হয়েছে তা-ও বৃষ্টি না হওয়ার কারণে ঝরে পড়ছে। কাঁচা আম বিক্রি করে ফেললে, পাকা আম কী করে বাজারজাত করব? খরচের টাকাও উঠবে না। এই পরিস্থিতিতে কী করব বুঝতে পারছি না।’’
বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ অধিকর্তা কৌশিক ব্রহ্মচারী বলেন, ‘‘গাছের গোড়ায় শুকনো পাতা জড়ো করে ভিজিয়ে দিতে হবে। গাছের গায়েও জল স্প্রে করতে হবে। তবে অনেকটাই উপকার হবে।’’
কৃষি আবহাওয়া গবেষক দেবলীনা সরকার জানান, চলতি সপ্তাহের মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় এলাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই, বরং তাপপ্রবাহ চলবে। তাই প্রয়োজনীয় ওষুধ ব্যবহার করা উচিত বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে।