পঞ্চাশ দিনের সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু স্বাভাবিক হয়নি নগদের সরবরাহ। ফলে এখনও মাঠেই পড়ে রয়েছে ধান।
ক্যানিং মহকুমার ক্যানিং-১, ২, গোসাবা, বাসন্তী ব্লকের ধান চাষিদের অবস্থা এমনই। কেউ ধান কাটার মজুর পাচ্ছেন না। আবার কেউ কেউ মাঠ থেকে ধান কাটতে পারলেও সেই ধান বিক্রি করতে পারছেন না। ধান বিক্রি না হওয়ায় শোধ করা যাচ্ছে না মহাজনের থেকে নেওয়া ঋণ।
গোসাবার আমলামেথি গ্রামের চাষি রঙ্গ সর্দার, প্রতিমা সর্দারদের ক্ষোভ, ‘‘গ্রামীণ এলাকায় ব্যাঙ্ক কম। ফলে হাতে নগদ খুব কম। কিন্তু মজুরেরা জানিয়ে দিয়েছেন, খুচরো না দিলে ধান কাটা যাবে না। তাই কেউ কেউ নিজেরাই ধান কেটে নিচ্ছেন। যাঁরা সেটি পারছেন না তাঁদের ধান জমিতেই পড়ে রয়েছে।’’ বাসন্তীর চাষি ফারুক আহম্মেদ সর্দার ৬ বিঘে জমিতে ধান চাষ করেছিলেন। কিন্তু মজুর না পাওয়ায় এখনও সেই ধান কেটে ঘরে তুলতে পারেননি। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘ধান বিক্রি না হওয়ায় ঘরে নগদ টাকা নেই। তাই অন্য ফসল চাষও করতে পারছি না।’’
সাধারণত ক্যানিং মহকুমার আড়তদারেরা চাষিদের থেকে ধান কিনে বর্ধমান এবং হুগলির বিভিন্ন চাল কলে বিক্রি করেন। কিন্তু ৫০০-১০০০ টাকার নোট বাতিলের পরে সেই ‘সাপ্লাই লাইন’ কাটতে বসেছে। বাসন্তীর শিবগঞ্জের এক ধানের আড়তদার জানান, তাঁর গুদামে প্রায় ৬০০ বস্তা ধান পড়ে রয়েছে। কিন্তু নগদ সমস্যায় সেই ধান বিক্রি করা যাচ্ছে না। প্রায় একই কথা বলেছেন আরও কয়েকজন আড়তদার।
যদিও জেলার কৃষি দফতরের এক কর্তার দাবি, ‘‘ক্যানিং মহকুমার প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ জমির ধান চাষিরা ইতিমধ্যেই কেটে নিয়েছে। ধান বিক্রি করতে সমস্যা হচ্ছে এ রকম কোনও খবর নেই। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’