প্রতীকী ছবি।
অশান্ত কাবুলে আটকে পড়েছিল ছেলে। উৎকন্ঠায় পরিবারের লোকজনের খাওয়া-ঘুম বন্ধ হতে বসার জোগাড়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অবশ্য কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে বাবা-মায়ের। তাঁরা জানতে পেরেছেন, বুধবার রাতে কাবুল ছেড়ে কাতারে পৌঁছেছে ছেলে। পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে, কাতারে স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয়েছে ছেলের। করোনা পরীক্ষা হয়েছে। খাওয়া-দাওয়ারও অসুবিধা নেই। ঘরের ছেলে কবে ঘরে ফেরে, এখন সে দিকে তাকিয়ে বাড়ির লোকজন। তাঁরা জানালেন, সোমবার বিমানে দিল্লিতে পৌঁছনোর কথা নির্মল ঘোষের (নাম পরিবর্তিত)।
হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়ে আফগানিস্তান পাড়ি দিয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের বনবনিয়ার যুবক নির্মল। সবেমাত্র মাস চারেক আগে আফগান মুলুকে পা ফেলেছিলেন। দমদমের একটি ঠিকাসংস্থার মাধ্যমে সে দেশে গিয়ে কাবুল বিমানবন্দরের কাছে একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করতেন। সেখানে আমেরিকান সেনাদের খাবার পরিবেশন করার দায়িত্ব ছিল নির্মলের।
আফগানিস্তানে তালিবানের উত্থানের পরে বাড়ি ফিরতে চেয়ে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন নির্মল। দেশে ফেরানোর আশ্বাস দেওয়া হয় তাঁকে। এ দিকে, তালিবানদের অত্যাচারের নানা ঘটনা সংবাদমাধ্যম থেকে জানতে পারছেন নির্মলের বাবা-মা। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। মায়ের কথায়, ‘‘ক’টা দিন খুব উদ্বেগের মধ্যে কেটেছে। কাতারে পৌঁছে গিয়েছে জেনে এখন একটু নিশ্চিন্ত লাগছে। তবে যতক্ষণ না বাড়ি ফেরে, ততক্ষণ পুরোপুরি স্বস্তি পাচ্ছি না।’’
নির্মলের পরিবারে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও উদ্বেগ কাটছে না অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের আস্রাফাবাদ এলাকার বাসিন্দা বিজয় মণ্ডলের (নাম পরিবর্তিত) পরিবারের। এখনও কাবুলে আটকে আছেন বিজয়।
২০১৮ সালে একটি সংস্থার মাধ্যমে রান্নার কাজ নিয়ে গিয়েছিলেন আফগানপ্রদেশে। থাকেন কাবুল বিমানবন্দর এলাকায়। টেলিফোনে জানালেন, হোটেলেই আটকে আছেন। আমেরিকান সৈন্যরা ভরসা দিচ্ছেন। তবে দূর থেকে গুলিগোলার আওয়াজ ভেসে আসছে। দেশে ফিরতে চেয়ে ভারতীয় দূতাবাসে যোগাযোগ করেছেন তিনিও। কিন্তু এখনও ফেরার বিমান পাননি। তাঁর সঙ্গেই উত্তর ২৪ পরগনার আরও কয়েকজন যুবক আটকে আছেন বলে জানালেন বিজয়। তাঁর কথায়, ‘‘বাঙালিদের অনেকেই আফগানদের সঙ্গে বিমানে ওঠার লাইনে গিয়ে দাঁড়াচ্ছেন। কিন্তু সুযোগ মিলছে না।’’
ভিডিয়ো কলে বিজয়ের কথা হচ্ছে পরিবারের সঙ্গে। স্ত্রী বলেন, ‘‘খুবই দুশ্চিন্তায় রয়েছি। ওখানকার পরিস্থিতি ভয়াবহ বলে শুনেছি।’’