প্রতীকী ছবি।
গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে বা গ্যাস বার্নার থেকে আগুন ছড়িয়ে দুর্ঘটনা, এমনকি মৃত্যুও ঘটে। তাই এই দু’টি জিনিস তৈরি এবং বিক্রির উপরে রয়েছে সরকারি বিধিনিষেধ। অথচ সব কিছুকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ভুয়ো ছাপ মেরে চলছিল গ্যাস বার্নার তৈরি ও বিক্রি। সম্প্রতি ভিন্ রাজ্যের এমন একটি চক্রের ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ। বাজেয়াপ্ত হয়েছে ১৫০টি গ্যাস বার্নার, প্রচুর ভুয়ো স্টিকার ও নকল নথি।
নিয়মানুযায়ী এ দেশে তিনটি তেল উৎপাদনকারী সংস্থা— ইন্ডিয়ান অয়েল, ভারত পেট্রোলিয়াম ও হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়াম ছাড়া গ্যাসের বার্নার কেউ তৈরি করতে পারে না। সংস্থাগুলির যে ডিলারের কাছ থেকে গ্রাহকেরা গ্যাসের সংযোগ নেন সেখান থেকেই বার্নার কেনার কথা। তবে কেউ কেউ বাইরে থেকেও কেনেন।
পুলিশ জানায়, সম্প্রতি বারাসতের একটি বাড়িতে বার্নার থেকে দুর্ঘটনা ঘটে। যে সংস্থার গ্যাস সিলিন্ডার ছিল, তাদের কর্মীরা দেখেন, বার্নারটি ভুয়ো। তাতে ‘আইএসআই’ বা ‘আইএসও’ ছাপ নেই। এর পরেই তদন্তে নেমে আমডাঙার আওয়ালসিদ্ধি থেকে চার জনকে ধরে পুলিশ। ধৃত গফ্ফর মালিক, নুর মহম্মদ, মহম্মদ রহিস এবং তসলিম রাহি আপাতত দমদম সেন্ট্রাল জেলে।
পুলিশ জানায়, যে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা গ্যাস বার্নারে থাকার কথা, তার কিছুই বাজেয়াপ্ত বার্নারে নেই। ধৃতেরা জানিয়েছে, সেগুলি ৫৬০ টাকায় বিক্রি হত। কিন্তু সেখানে কিছু স্টিকার মিলেছে যাতে বার্নারের দাম লেখা রয়েছে আট হাজার টাকা। চক্রটি ৫৬০ টাকার বার্নার খোদ ডিলারদের কাছেই আট হাজার টাকায় বিক্রি করত কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
ওয়েস্ট বেঙ্গল এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটর্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল বলেন, ‘‘গ্যাস বার্নার খারাপ হয়ে গেলেও তা ডিলারের কাছে জমা করাই নিয়ম। সেই বার্নার তেল উৎপাদন সংস্থার প্ল্যান্টে পাঠানো হয়। কেন খারাপ হল তা খতিয়ে দেখাও হয়।’’
উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গোটা চক্রের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।’’