বাজেয়াপ্ত: ওষুধ। নিজস্ব চিত্র
জাল হোমিওপ্যাথি ওষুধ কারখানার হদিস পেল আবগারি দফতর। কারখানা থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় দু’গাড়ি জাল ওষুধ। বুধবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে কাকদ্বীপের বাংলারমাঠ সন্তোষপুর গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, সীতা দাস নামে এক মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতকে বৃহস্পতিবার কাকদ্বীপ আদালতে তোলা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত রাজকুমার তামেলি পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আবগারি দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে রাজকুমার ‘মীরা হোমিও হোম’ নামে একটি ওষুধ তৈরির কারখানা খোলে। ২০১৮ সালে আবগারি দফতর অভিযান চালিয়ে জাল ওষুধ তৈরির অভিযোগে ওই ব্যক্তিকে একবার গ্রেফতারও করেছিল। সিল করে দেওয়া হয়েছিল কারখানাটি।
অভিযোগ, রাজকুমার ফের নিজের বাড়িতে জাল ওষুধ তৈরির কারবার চালাচ্ছিল। সে খবর আবগারি দফতর জানতে পারে। সুন্দরবন আবগারি দফতরের চারটি শাখার আধিকারিক-সহ ২০ জনের দল কারখানায় হানা দেয়। বেলা ২টো থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত তল্লাশি চালান। প্রায় ২ গাড়ি জাল ওষুধ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
আবগারি দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ওষুধ তৈরির কারখানা করতে অ্যালকোহল ব্যবহার হয়। আবগারি দফতর এবং ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ডের অনুমতিপত্র লাগে। কিন্তু ২০১৮ সালে বাজেয়াপ্ত করা ওষুধের নমুনা সংগ্রহ করে কেন্দ্রীয় সংস্থা ন্যাশন্যাল স্টেট হাউজে পাঠায়। সেখানে থেকে পাওয়া রিপোর্টে জানা গিয়েছে, কোনও নিয়মনীতি না মেনে সম্পূর্ণ জাল ওষুধ তৈরি করা হয়েছে। যা খেলে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। সে সময়েই আবগারি ও ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ডের অনুমতি বাতিল করা হয়েছিল। বাতিল করার পরেও রাজকুমার লুকিয়ে ফের জাল ওষুধ কারখানা চালাচ্ছিল।
এক আধিকারিক জানান, ওই কারখানায় ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে ইথাইল অ্যালকোহল ব্যবহার না করে মিথাইল অ্যালকোহল ব্যবহার করা হয়েছে। ইথাইল অ্যালকোহল যথেষ্ট মূল্যবান ও সহজে পাওয়া যায় না। আবার মিথাইল অনেকটা সহজে বাজার থেকে পাওয়া যায়। আর মিথাইল দিয়ে তৈরি করা ওষুধ বেশি দিন খেলে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই জাল কারখানার ওষুধ কাকদ্বীপ ছাড়াও সাগর, পাথরপ্রতিমা, নামখানা ও কুলপি এলাকায় বিভিন্ন বাজারে ওষুধের দোকানে সরবরাহ করা হত। সে বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।