বাড়িতে নকল মদ তৈরির কারখানা, গ্রেফতার ৩

শহরতলির মহেশতলায় সেই বাড়ির একতলায় একটি পরিবারের বাস। সেই পরিবারের কর্তা পঞ্চাশোর্ধ্ব মুন্না সাউ পেশায় ব্যবসায়ী। তাঁর দুই ছেলে অভয় ও অনুপ স্থানীয় মোবাইলের দোকানে কাজ করেন। বাড়িতে মুন্নার স্ত্রী ছাড়াও থাকেন এক আত্মীয় কেদার সাউ। কেদারের নিজের অটো রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৭ ০২:০১
Share:

হাতেনাতে: বাজেয়াপ্ত হয়েছে হুইস্কির নকল লেবেল। নিজস্ব চিত্র

সাধারণ দোতলা বাড়ি।

Advertisement

শহরতলির মহেশতলায় সেই বাড়ির একতলায় একটি পরিবারের বাস। সেই পরিবারের কর্তা পঞ্চাশোর্ধ্ব মুন্না সাউ পেশায় ব্যবসায়ী। তাঁর দুই ছেলে অভয় ও অনুপ স্থানীয় মোবাইলের দোকানে কাজ করেন। বাড়িতে মুন্নার স্ত্রী ছাড়াও থাকেন এক আত্মীয় কেদার সাউ। কেদারের নিজের অটো রয়েছে। তিনি সেই অটো চালান। পাড়া প্রতিবেশীরা সকলেই ওই পরিবার সম্পর্কে এর বেশি কিছু জানতেন না।

সেই বাড়ির দোতলায় হানা দিয়ে চোখ কপালে উঠে গিয়েছে রাজ্য আবগারি দফতরের অফিসারদের। রবিবার কাকভোরে সেখান থেকে একশো লিটার ‘র’ স্পিরিট পাওয়া গিয়েছে। সঙ্গে পাওয়া গিয়েছে বেআইনি হলোগ্রাম, পাঞ্চিং মেশিন, একটি নামী ব্র্যান্ডের হুইস্কির নকল লেবেল ও ছিপি, নকল ওই হুইস্কি ও দেশি মদ মিলিয়ে আরও প্রায় ৮৫ লিটার মদ। আবগারি দফতরের কলকাতার কালেক্টর সুব্রত বিশ্বাস জানিয়েছেন, হানার সময়ে মুন্না বাড়িতে ছিলেন না। অভয়, অনুপ ও কেদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুব্রতবাবুর কথায়, ‘‘সারা দিন মোবাইলের দোকানে কাজ করার পরে রাতে দোতলায় বসে ‘র’ স্পিরিট থেকে বেআইনি মদ বানাতেন অভয় ও অনুপ। সঙ্গে থাকতেন মুন্না ও কেদার। কাকভোরে কেদারের অটো করে সেই মদ সরবরাহ করা হতো। পরে কেদার ওই এলাকার একটি রুটে
আর দশ জন অটোচালকের মতো অটো চালাতেন।’’

Advertisement

আবগারি দফতর সূত্রের খবর, মুন্নার এই বাড়ির হদিস পাওয়াটা সহজ ছিল না। গত ১২ অক্টোবর কলকাতার অফিসারেরা হেস্টিংস এলাকায় একটি ট্যাক্সির ভিতর থেকে একশো লিটার বেআইনি ‘র’ স্পিরিট-সহ বদরুদ্দিন আনসারি নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেন। বদরুদ্দিনকে টানা কয়েক দিন ধরে জেরা করার পরে জানা যায় কেদার সাউয়ের নাম। জানা যায়, অটো করে এসে কেদারই তাঁকে ওই ‘র’ স্পিরিট সরবরাহ করেছেন। এর পরে কেদারকে নিজেদের জালে ধরে আবগারি দফতর। রবিবার ভোরে কেদারই অফিসারদের মহেশতলায় মুন্নার বাড়ি নিয়ে যান।

বড় বড় ট্যাঙ্কারে করে এই ‘র’ স্পিরিট বিভিন্ন মদ প্রস্তুতকারী সংস্থায় সরবরাহ করা হয়। অভিযোগ, মাঝপথে সেই ট্যাঙ্কার কেটে স্পিরিট বার করে নেয় এক শ্রেণির দুষ্কৃতী। সেই স্পিরিট খোলা বাজারে লিটার প্রতি একশো টাকায় বিক্রি করা হয়। সেই ‘র’ স্পিরিটে জল, কৃত্রিম রং ও গন্ধ মিশিয়ে দেশি মদ বা বাজার
চলতি হুইস্কি ও রাম তৈরি করে তা বিক্রি করা হয়। রঙের জন্য কখনও কখনও চিনি পুড়িয়ে ব্যবহারও করা হয়। বাজার চলতি রাম ও হুইস্কির নকল লেবেল ও ছিপি যোগাড় করে, হলোগ্রাম নকল করে একেবারে আসল মদের বোতলের মতো অবয়ব দেওয়া হয়। সুব্রতবাবু জানিয়েছেন, মুন্নার বাড়ির দোতলায় ঠিক এই কাজটিই করা হতো।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement