ফাইল চিত্র
লকডাউন পর্বে দীর্ঘ জটিলতা কাটিয়ে ৭৫ দিন বন্ধ থাকার পরে ৭ জুন থেকে পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ফের শুরু হয়েছে পণ্য রফতানির কাজ। কিন্তু এখনও এ দেশ থেকে পণ্য আমদানি শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে সীমান্তের ও পারে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের। বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানি অবিলম্বে চালু হোক, চাইছেন এ দেশের ব্যবসায়ীরাও।
এ ব্যাপারে বেনাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এ দেশের প্রশাসন-সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, বেনাপোল বন্দরে এই মুহূর্তে পণ্য নিয়ে ৭০০-৮০০ বাংলাদেশি ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ সাজেদুর রহমান বলেন, ‘‘পণ্য রফতানি শুরু না হওয়ায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ট্রাকের মধ্যে পণ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ট্রাকের যন্ত্রপাতি বিকল হচ্ছে। পণ্য আমদানিতে আমরা সব রকমের সহযোগিতা করছি। আমরা চাই, দ্রুত পণ্য রফতানি শুরু করুক ভারত।’’
সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, বেনাপোলে আটকে থাকা বাংলাদেশি ট্রাকের মধ্যে রয়েছে তাঁতের শাড়ি, ওড়না, নকশি কাঁথা, পাটের সুতলি, চট, মাছ ধরার জাল প্রভৃতি। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ‘‘বেনাপোল বন্দর এলাকা এখন করোনামুক্ত। গ্রিন জ়োনে রয়েছে। পণ্য নিয়ে বাংলাদেশের চালকেরা পেট্রাপোলে গেলে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা নেই।’’ বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, ‘‘ভারতীয় চালকেরা পণ্য নিয়ে বেনাপোলে আসছেন। তাঁরা এখানে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। তা হলে আমাদের চালকেরা কেন পণ্য নিয়ে পেট্রাপোলে যাবেন না?’’ পেট্রাপোল এক্সপোর্টার্স অ্যান্ড ইমপোর্টার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পরিতোষ বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরাও চাই বেনাপোল থেকে পণ্য রফতানি শুরু হোক। এখানকার অনেক ব্যবসায়ী এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সরকারও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’’
পণ্য আমদানি কেন বন্ধ রয়েছে?
ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার পেট্রাপোলের ম্যানেজার শুভজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘পণ্য আমদানির কাজ শুরু করতে রাজ্য সরকারের নির্দেশ আসেনি।’’ উত্তর ২৪ পরগনা জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি গোপাল শেঠ পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানির কাজ চালু করতে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং সর্তকতামূলক পদক্ষেপ নিয়ে আমদানির কাজ শুরু করার জন্য বলেছেন। গোপাল বলেন, ‘‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সস্পর্কের স্বার্থে দ্রুত পণ্য আমদানি শুরু হওয়া জরুরি।’’ ৭ জুন পণ্য রফতানি শুরু হওয়ার পরে অভিযোগ ওঠে বাণিজ্যের গতি খুব ধীরে চলছে। মূলত ট্রাক চালকের অভাবে ওই সমস্যা হচ্ছিল।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার ২৪৩টি ট্রাক পণ্য নিয়ে বেনাপোলে গিয়েছে। ধীরে ধীরে বাণিজ্যের গতি বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। পণ্য আমদানি চালু করতে আলোচনা চলছে।’’