চাঁদা দিতে না চাইলে খুলে দেওয়া হচ্ছে চাকার হাওয়া

বড়দের পাশাপাশি ছোট ছেলেমেয়েরাও হাতে বিল বই নিয়ে রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে। গাড়ি দেখলেই হাত দিয়ে ব্যারিকেড করে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে।

Advertisement

সামসুল হুদা

ভাঙড় শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৯ ০২:০৫
Share:

জুলুম: পথ আটকে। নিজস্ব চিত্র

চাঁদা আদায়কারীদের জুলুমে অতিষ্ঠ গাড়ি চালকেরা। প্রতি বছরই পুজোর সময় রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে জোর করে চাঁদা আদায় করার অভিযোগ ওঠে বিভিন্ন পুজো কমিটির বিরুদ্ধে। বিশেষ করে কালীপুজোর সময়ে ভাঙড়ের বহু রাস্তার মোড়ে গাড়ি থামিয়ে চাঁদা আদায় করা হয় বলে অভিযোগ। গত কয়েক দিন ধরে ভাঙড়ের কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার ভোজেরহাট-তাড়দহ রাস্তা, তাড়দহ-মক্রমপুরের রাস্তা, বারুইপুর-ক্যানিং রাস্তা-সহ বিভিন্ন এলাকায় জোর করে গাড়ি থামিয়ে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলে চালকদের অভিযোগ। ১০-২০ টাকা ধরিয়ে নিস্তার মিলছে না। এক-দুশো টাকা চাওয়া হচ্ছে। টাকা না দিলে চাকার হাওয়া খুলে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।

Advertisement

বড়দের পাশাপাশি ছোট ছেলেমেয়েরাও হাতে বিল বই নিয়ে রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে। গাড়ি দেখলেই হাত দিয়ে ব্যারিকেড করে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। ছোট গাড়ি হলে ১০০, বড় গাড়ি হলে ২০০ টাকার বিল ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আগের দিন একই রাস্তা ধরে যাওয়ার সময়ে চাঁদা দিয়েছেন বললে সেই বিল দেখতে চাওয়া হচ্ছে। বিল দেখাতে না পারলে আর একবার টাকা দিতে হচ্ছে। সঙ্গে জুটছে গালিগালাজ।

পুলিশের গাড়ির উপরে নজর রাখছে চাঁদা শিকারির দল। রাস্তায় পুলিশের গাড়ি ঢুকলেই খবর চলে যাচ্ছে।

Advertisement

অন্যান্য বার পুজোর চাঁদা না দিলে গাড়ি চালকদের মারধর, হেনস্থা অভিযোগ উঠত। এ বার পুলিশের কড়াকড়ি এবং নজরদারিতে এখনও পর্যন্ত মারধরের অভিযোগ ওঠেনি। তবে পুলিশের টহল আরও বাড়ানো উচিত বলে মনে করেন অধিকাংশ চালক। ভাঙড়ের গাড়িচালক ইব্রাহিম মোল্লা বলেন, ‘‘আমি সপ্তাহে তিন-চার দিন কলকাতা-সহ বিভিন্ন জায়গায় সব্জি সরবরাহ করতে যাই। কিন্তু পুজোর এই সময়টায় রাস্তায় বেরোতে ভয় করে। কয়েক দিন আগে তাড়দহ এলাকায় একটি পুজো কমিটিকে ৫১ টাকা চাঁদা দিয়েছিলাম। সেই বিল কোনও ভাবে হারিয়ে ফেলি। পরে আবার ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়ে চাঁদা দিতে না চাওয়ায় গালাগাল করা হল। আবার ১০১ টাকা চাঁদা দিতে হল।’’

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অবশ্য চালকেরা চাঁদা আদায়কারীদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করছেন না। তাঁদের অনেকে জানাচ্ছেন, সারা বছর এই সব রাস্তায় যাতায়াত করতে হয়। পুলিশে অভিযোগ জানালে পরে যদি ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তে হয়, এই ভয় আছে তাঁদের।

কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার আইসি স্বরূপকান্তি পাহাড়ি বলেন, ‘‘চাঁদার জুলুম নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও চালক লিখিত অভিযোগ করেননি। তবে পুলিশ বিভিন্ন রাস্তায় নজরদারি চালাচ্ছে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement