প্রকাশ্যে ধুমপান নিষেধ। প্রতীকী চিত্র।
কয়েক দিন আগে শুরুটা হয় গোপালনগর বাজার থেকে। উত্তর ২৪ পরগনা জুড়ে প্রকাশ্যে ধূমপানের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। শনিবার, পেট্রাপোল বন্দরে অভিযান চলল। জরিমানার পাশাপাশি সচেতনও করা হল ধূমপায়ীদের। তাতে অনেকে সন্তোষ প্রকাশ করলেও এই অভিযানের ধারাবাহিকতা কতদিন বজায় থাকবে, তা নিয়ে প্রশ্নও উঠছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের দাবি, রীতিমতো পরিকল্পনা করেই তাঁরা অভিযানে নেমেছেন। যে সব জায়গায় ভিড় বেশি হয়, সে সব জায়গায় অভিযান চলবে। মাত্রাও বাড়ানো হবে।
তবে, ধূমপানের প্রবণতা আটকানোর ক্ষেত্রে অর্থিক জরিমানা করাই একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। জোর দেওয়া হচ্ছে সতেচনতায়। কর্মসূচিতে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং একজন সমাজকর্মী থাকছেন। চেষ্টা করেও যাঁরা ধূমপান ছাড়তে পারছেন না, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ তাঁদের পরামর্শ দিচ্ছেন। বিশেষজ্ঞদের আশা এই পরামর্শ কাজে এলে অনেকে ধূমপানের অভ্যাস ছাড়তেও পারেন।
এ দিন দুপুরে পাসপোর্ট-ভিসা নিয়ে পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে ঢুকেই প্রকাশ্যে সিগারেটে সুখটান দিচ্ছিলেন বাংলাদেশের যশোর জেলার এক যুবক। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁকে পাকড়াও করেন। ৫০ টাকা জরিমানা করা হয়। স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁকে ধূমপানের ক্ষতিকর দিক নিয়ে বোঝান। এমনকি, তাঁর ধূমপানের জন্য আশপাশের লোকজনের কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে, সে ব্যাপারেও তাঁকে সচেতন করা হয়। আরও কয়েক জনকেও জরিমানা করা হয়।
এ সব দেখে, যাঁরা ধূমপান করেন না, তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা চান, এই অভিযান নিয়মিতচলতে থাকুক।
এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, ‘‘পেট্রাপোলে প্রথম যে ধূমপায়ীকে ধরা হয়, তিনি স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে বচসা শুরু করে দিয়েছিলেন। ভিড় জমে যায়। ফলে, স্বাস্থ্যকর্মীদের একসঙ্গে অনেককে বোঝাতে সুবিধা হয়। তারপরে অন্তত ত্রিশ মিনিটের মধ্যে এলাকায় আর কাউকে প্রকাশ্যে ধূমপান করতে দেখা যায়নি। সচেতনতা বৃদ্ধিতে লিফলেট বিলি করা হচ্ছে।’’
স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, ধূমপানের ফলে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি), ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসের মতো রোগ তো হয়ই, নানা ধরনের ক্যানসারের আশঙ্কাও বহুগুণ বেড়ে যায়।
পরোক্ষ ধূমপানেও ক্ষতি অনেক। যে হারে অল্পবয়সি ছেলেমেয়েদের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা বাড়ছে, তা নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেন স্বাস্থ্যকর্তারা।