ঝুঁকি: এভাবেই চলছে পারাপার। —নিজস্ব চিত্র।
গ্রামের রাস্তার উপর দিয়ে রেললাইন চলে গিয়েছে। অভিযোগ, সেই ক্রসিংয়ে কোনও গেট বা রক্ষীর ব্যবস্থা না থাকায় দুর্ঘটনা ঘটছে। রেল লাইনে পড়ে থাকা খোয়াতেও গাড়ির চাকা আটকে বিপত্তি ঘটছে প্রায়ই। শিয়ালদহ-কাকদ্বীপ শাখায় সিংহেরহাট ও মেহেনাপুর দুই গ্রামের মাঝে ওই রাস্তায় লেভেল ক্রসিং ও রক্ষী রাখার দাবি নিয়ে রেল অবরোধ, আন্দোলনও হয়েছে। তবে সমস্যার সমাধান হয়নি বলে অভিযোগ।
কুলপি ব্লকের রামকৃষ্ণপুর পঞ্চায়েতের মেহেনাপুর গ্রাম থেকে ঢালাই রাস্তাটি রেল লাইন পার হয়ে মিশেছে ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের সিংহেরহাট মোড়ে। ওই মোড় থেকে একদিকে কাকদ্বীপ, নামখানা, বকখালি ও পাথরপ্রতিমা, অন্য দিকে কুলপি, ডায়মন্ড হারবার ও কলকাতায় যাওয়ার রাস্তা। ওই ঢালাই রাস্তা দিয়ে নিত্য যাতায়াত করেন এনায়েতপুর, রামেশ্বরপুর, কাকনন-সহ ৮ থেকে ১০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। নিত্য প্রয়োজনে কুলপি ব্লক অফিস বা গ্রামীণ হাসপাতালে আসতে হলে ওই রেললাইন পার হয়েই আসতে হয়। শিয়ালদহ থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত রেল লাইন পাতার সময় ওই ঢালাই রাস্তার উপরে লাইন পাতা হয়েছিল। ওই রাস্তায় যাত্রী পরিবহণে প্রায় শতাধিক ছোট গাড়ি চলে। এলাকায় রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও মাদ্রাসা। পড়ুয়াদের লাইন পার হয়ে স্কুলে পৌঁছতে হয়।
অভিযোগ, রেল লাইনের মাঝে খালি অংশে পড়ে রয়েছে ছোট বড় খোয়া। গাড়ি পারাপারের সময় কোনও ভাবে আটকে পড়লেই সমস্যা। বছর দু’য়েক আগে এই জায়গায় ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যুও হয়েছে। সেই সময় বাসিন্দারা আন্দোলন শুরু করলে দফতর থেকে প্রহরী বসানো হয়েছিল। পরে প্রহরী তুলে নেওয়া হয়। ওই এলাকার বাসিন্দা মোটর ভ্যান চালক আমাদুল্লা মণ্ডল, তাজউদ্দিন মণ্ডলদের অভিযোগ, রেল লাইন যেন মৃত্যু ফাঁদ হয়ে রয়েছে। লাইন পারাপারের আগে, পরে কোনও হাম্প না থাকায় সমস্যা হয়। সেই সময় কোনও ভাবে গাড়ি বিকল হয়ে গেলে যে কোনও মুহূর্তে বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বছর দু’য়েক আগে রেল গেট করা ও প্রহরী বসানোর দাবিতে আন্দোলন হয়েছিল। অন্দোলনের জেরে প্রহরী বসানো হয়েছিল। কিন্ত কিছুদিন থাকার পর তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ব্লক প্রশাসন ও বিধায়ককে সমস্যার কথা জানানো হলেও ফল হচ্ছে না বলেই দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। কুলপির বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদার বলেন, “ওই রেল লাইনে রেল গেটে বসানোর জন্য দফতরে জানানো হয়েছে। রেল অনুমোদন দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পূর্ব রেলের জন সংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, “সমস্ত রেল লাইন পারাপারের রাস্তায় গেট বসাতে হলে সেখানে কর্মীও রাখতে হবে। সেটা সম্ভব নয়। তাছাড়া যদি লাইন পারাপারের জন্য রাস্তার দরকার হয়, তা হলে সাবওয়ে বা ওভারব্রিজ করা যেতে পারে।”