রেল অবরোধ করেছেন নিত্যযাত্রীরা। ছবি: সুজিত দুয়ারি।
দিন দিন পূর্ব রেলের বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখায় নিত্যযাত্রীদের ভিড় বাড়ছে। কিন্তু লোকাল ট্রেনের সংখ্যা বাড়েনি। এমনকি, ১২ কামরা ট্রেনও নিয়মিত ভাবে মেলে না। ফলে, প্রতিদিন সকাল-সন্ধের ব্যস্ত সময়ে যাত্রীদের ভিড় উপচে পড়ে ৯ কামরার লোকালগুলিতে। অনেককে কার্যত ঝুলে যেতে হয় গন্তব্যে। এই পরিস্থিতি অবিলম্বে নিয়মিত ১২ কামরার ট্রেন চালানোর দাবিতে সোমবার সকালে হাবড়া স্টেশনে অবরোধ করলেন নিত্যযাত্রীরা।
রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ৮টা ৫৫ মিনিট থেকে ৯টা ৫ মিনিট পর্যন্ত অবরোধ চলে। এর জেরে একটি ট্রেন কিছুটা দেরিতে চলে। রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পরে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
রেল পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘নিত্যযাত্রীরা আরপিএফ এবং আমাদের কাছে নিয়মিত ১২ কামরার ট্রেন চালানোর দাবিতে স্মারকলিপি জমা দেবেন বলে জানিয়েছেন। সেই দাবিপত্র আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেব।’’
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘‘আমরা বারো বগির ট্রেন দেওয়ার চেষ্টা করছি। সব সময় হয়ে ওঠে না। কখনও ৯ বগি, কখনও ১২ বগি— এ ভাবেই মিলিয়ে মিশিয়ে ট্রেন চালাতে হয়। অনেক সময় রেক মেরামত করতে পাঠাতে হয়।’’
এ দিন সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটের শিয়ালদহগামী ৯ বগির লোকালটি হাবড়া স্টেশনে ঢুকতেই যাত্রীরা বিক্ষোভ শুরু করে দেন। তাঁদের দাবি, দীর্ঘ দিন ধরে তাঁরা ওই ট্রেনটি ৯ থেকে ১২ বগি করার দাবি জানিয়ে আসছেন। রেল কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁরা আগে স্মারকলিপিও দিয়েছেন। কিন্তু নিয়মিত নয়, মাঝেমধ্যে ১২ বগির ট্রেন দেওয়া হয়।
এক নিত্যযাত্রীর অভিযোগ, ‘‘গত সপ্তাহে চার দিন ১২ বগির ট্রেন দেওয়া হয়েছিল। বাকি দিনগুলি ৯ বগির ট্রেন চলেছে। এর ফলে আমাদের খুবই সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। সোমবার সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনেও ৯ বগির ট্রেন দেওয়া হয়। তাই আমরা অবরোধ করে নিয়মিত ১২ বগির ট্রেনের দাবি তুলেছি।’’
নিত্যযাত্রীরা জানান, যশোর রোড সম্প্রসারণ না হওয়ায় সড়কপথে হাবড়া-অশোকনগর থেকে যানবাহনে করে বারাসত বা কলকাতায় পৌঁছতে অনেক সময় লেগে যায়। তাই যাতায়াতের জন্য তাঁরা ট্রেনের উপরই বেশি ভরসা করেন। এমনিতেই বনগাঁ- শিয়ালদহ শাখার ট্রেনে প্রচণ্ড ভিড় হয়। বহু যাত্রী বসার জায়গা তো দূরের কথা, দাঁড়ানোর জায়গাই পান না। ঠেলাঠেলি করে ট্রেনে ওঠানামা করতে হয়। ভিড়ের জেরে গেটে ঝুলে
অনেকে যাতায়াত করতে বাধ্য হন। ভিড় ঠেলে ট্রেনে ওঠানামা করতে নিয়ে প্ল্যাটফর্মে অনেকেই পড়ে গিয়ে চোট-আঘাত পান। যাত্রীদের দাবি, ট্রেন হাবড়া ছেড়ে অশোকনগর, গুমা, বিড়া পেরোনোর পরেই আর দাঁড়ানোর জায়গা থাকে না।