Coronavirus Lockdown

বিধ্বস্ত অবস্থা এত দিনের চেনা এলাকার 

চেনা শহরটা বড় অচেনা ঠেকছে।

Advertisement

জয়দেব দাস

সাগর শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২০ ০৫:৪৮
Share:

এ স্মৃতি ভয়ঙ্কর, এ স্মৃতি ভোলার নয়।

Advertisement

আমপান বয়ে যাওয়ার পর দিন সকাল। আকাশে তখনও মেঘের আস্তরণ। মাত্র দশ-বারো ঘণ্টা আগে ঝড়ের তাণ্ডবে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে এলাকা। সাগরদ্বীপের সমস্ত মিঠে পানের বরজ লন্ডভন্ড। উড়ে গিয়েছে সমস্ত অ্যাসবেস্টস, বাড়ির চাল। টালির চালও ক্ষতিগ্রস্ত। মাটির বাড়ির দেওয়াল ভেঙে পড়েছে। সে তুলনায় খড়ের চালযুক্ত ঘরগুলি তুলনায় ভাল অবস্থায়। রাস্তার উপরে ছোট-বড় গাছ ভেঙে বহু জায়গায় এগোনো যাচ্ছে না। পাড়ার লোকজন কুড়ুল-কাটারি-করাত নিয়ে ডালপালা কাটতে নেমে পড়েন। কিন্তু বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে, দলা পাকিয়ে যে ভাবে রাস্তার উপরে পড়ে, তাতে বিপদের আশঙ্কাও আছে।

সকালে বেরিয়েছি বাড়ির বাইরে। মাত্র তিন কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে সময় লাগল ৪০ মিনিট। চেনা শহরটা বড় অচেনা ঠেকছে। রুদ্রনগর চৌরঙ্গী মোড়ের ধ্বংসবশেষ দেখে আঁতকে উঠলাম। বাসস্ট্যান্ডের উপরে দাঁড়িয়ে থাকা প্রায় ৭৫ বছরের পুরনো বটগাছটি হতশ্রী চেহারায় দাঁড়িয়ে। লাগোয়া বিশ্রামাগারটি ক্ষতিগ্রস্ত। অধিকাংশ দোকানপাটের অবস্থাও খারাপ।

Advertisement

এগিয়ে চললাম রুদ্রনগর ব্লক বাজারের দিকে। সুন্দরবন জনকল্যাণ সঙ্ঘ বিদ্যানিকেতন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে টিনের চালার বেশ কয়েকটি ক্লাসরুম ভেঙে চুরমার। মিড ডে মিলের বোর্ড উড়িয়ে নিয়ে ফেলেছে কয়েক’শো ফুট দূরে। ভবানী ভবনের দোতলের অ্যাসবেস্টসের ছাউনি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে উড়ে গিয়েছে।

আরও কিছুটা এগোতেই দেখি, রাস্তার দু’পাশের দোকানঘরগুলির দোতলার টিন ও অ্যাসবেস্টসের ছাউনি ভেঙে দুমড়ে রাস্তার পাশে পড়ে। বাস রাস্তার উপরে ভেঙে পড়েছে পিডব্লুডির ইটের পাঁচিল। রুদ্রনগরের অফিস পাড়ায় একটাও সরকারি অফিস ঘর আস্ত নেই। কারও তিনতলার ফাইবার শিটের ছাউনি উড়ে গিয়েছে। কারও আবার বা টিন, অ্যাসবেস্টসের চাল ভেঙে দুমড়ে, টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে কাছে দূরে। সব মিলিয়ে ধ্বংসের চিহ্ন সর্বত্র।

(শিক্ষারত্নপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement