প্রতীকী ছবি
পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি, তাঁর ছেলে-বৌমা সহ পরিবারের সাতজনের নামে আমপানের ক্ষতিপূরণের টাকা ব্যাঙ্কে ঢুকেছে বলে অভিযোগ উঠল।
ঘটনাটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির। এই জেলারই আর এক প্রান্তে মথুরাপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হামিদা বিবি ও তাঁর স্বামী-ছেলের নামে ক্ষতিপূরণের টাকা ঢুকেছিল ব্যাঙ্কে। সে টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। আর নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তৃণমূলের ধীরেন্দ্রনাথ পাত্রের দাবি, তাঁর ছেলের নামেই শুধু টাকা এসেছে। বাকি যাঁদের কথা বলা হচ্ছে, তাঁরা পড়শি। আত্মীয় নন। ছেলেকে টাকা ফেরত দিতে বলেছেন বলেও দাবি করেছেন ধীরেন্দ্রনাথ। তাঁর অভিযোগ, ‘চক্রান্ত করে’ বদনাম করতেই কেউ ক্ষতিপূরণের তালিকায় নাম ঢুকিয়ে দিয়েছিল।
কী বলছেন তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কল্পনা মালি মণ্ডল? তাঁর যুক্তি, তাড়াহুড়োয় কিছু ভুল হয়েছে। তা ছাড়া, লকডাউন পর্বে শারীরিক দূরত্ব বিধি মেনে কাজ করতে গিয়ে কিছুটা বাড়তি অসুবিধা হয়েছে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নামখানা ব্লকের ৭টি পঞ্চায়েতের মধ্যে আমপানে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নদী-লাগোয়া ফ্রেজারগঞ্জ, শিবরামপুর, হরিপুর, নামখানা ও নারায়ণপুর পঞ্চায়েত। খড়, টালি বা অ্যাসবেস্টসের চাল দেওয়া প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার মাটির বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙেছে। প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পেয়েছে প্রায় ৮
হাজার পরিবার।
তার মধ্যেই আছেন নারায়ণপুর পঞ্চায়েতের নাদাভাঙা গ্রামের বাসিন্দা ধীরেন্দ্রনাথ। দোতলা পাকা বাড়ি তাঁর। ঝড়ে কোনও ক্ষতি হয়নি বলেই অভিযোগ স্থানীয় মানুষজনের।
ওই এলাকারই হাতানিয়া দোহানিয়া নদী-লাগোয়া গ্রামে আমপানের তাণ্ডবে প্রায় সমস্ত মাটির বাড়ি তছনছ হয়ে গিয়েছিল বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় মানুষ। সরকারি সাহায্য এখনও পাননি অনেকেই। কেউ প্রতিবেশীদের বাড়িতে, কেউ আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে আছেন। উঁচু জায়গায় ত্রিপল টাঙিয়েও মাথা গুঁজেছেন কেউ কেউ। এই যেখানে পরিস্থিতি, সেখানে ধীরেন্দ্রনাথের পরিবারের ক্ষতিপূরণের টাকা পাওযা নিয়ে ক্ষোভ দানা বেঁধেছে।
কল্পনা বলেন, ‘‘সহ সভাপতিকে ইতিমধ্যেই টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’’ নামখানার বিডিও রাজীব আহমেদ বলেন, ‘‘ক্ষতি হয়নি, অথচ টাকা পেয়েছেন, এমন অভিযোগ পেলেই টাকা ফেরত নেওয়া হচ্ছে। তবে সহ সভাপতির কাছ থেকে এখনও টাকা ফেরত আসেনি। বিস্তারিত তদন্ত হচ্ছে।’’