জলমগ্ন: হাসনাবাদে। নিজস্ব চিত্র
ত্রাণের খাবার নিতে বেরিয়ে জোয়ারের জলে ভেসে যাচ্ছিল বছর এগারো বয়সী নাতনি। তা দেখে জলে ঝাঁপ দেন ঠাকুমা। খেজুরগাছের ডাল আঁকড়ে ধরে যখন দু’জনে কোনও রকমে জলের সঙ্গে লড়াই করছিলেন, সে সময়ে গ্রামের মানুষ সাঁতরে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। শনিবার দুপুর এই ঘটনাটি ঘটে হাসনাবাদের খাঁপুকুর গ্রামে।
সম্প্রতি আমপানের তাণ্ডবে ওই গ্রামে ডাঁসা নদীর বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। বাঁধ বাঁধা হলেও পূর্ণিমার ভরা কোটালে নদীতে জল বাড়ায় হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে সেই বাঁধ। ফের নোনাজল ঢোকে গ্রামে।
এ দিন দুপুর তখন ১২টা। জোয়ার বাড়ায় নদীর জল গ্রামের মধ্যে কোমর ছাড়িয়েছে। ওই জলের মধ্যে দিয়ে ত্রাণ নিতে যাচ্ছিল পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া, হাবলিপাড়ার বাসিন্দা তিথি দাস। স্রোতের টানে ভেসে যেতে থাকে। পিছনেই ছিলেন বছর ষাটেকের ঠাকুমা মাধবী দাস। নাতনিকে বাঁচাতে জলে ঝাঁপ দেন তিনি। জামা ধরে কোনও রকমে দু’শো মিটার সাঁতরে দুরে গিয়ে একটা খেজুরগাছের ডাল ধরে নিজেদের রক্ষা করেন।
বিষয়টি দেখতে পেয়ে জলে ঝাঁপ দেন স্থানীয় কয়েকজনও। ঠাকুমা এবং নাতনিকে টেনে রাস্তার কাছে নিয়ে আসেন তাঁরা। ঠাকুমার সাহসিকতায় প্রশংসা করেন সকলে।
স্থানীয় বাসিন্দা মমতা হাউলি, কণিকা হাউলিদের কথায়, ‘‘আমপানের পরে পঞ্চায়েত থেকে একবারের জন্য চিঁড়ে, গুড়, তেল, নুন-হলুদ দিয়েছে। একটা পলিথিনও পেয়েছি। বাঁধ বাঁধা হয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয়বার বাঁধ ভাঙায় আমাদের সব ভেসে গিয়েছে।’’ সরকারি ত্রাণ থেকেও বাঁধ বাঁধে বেশি জরুরি বলে মনে করে সকলে।