প্রতীকী ছবি।
আমপানে ক্ষতিপূরণের জন্য সম্প্রতি নতুন করে আবেদন জমা নিয়েছে সরকার। তার ভিত্তিতে কারা ক্ষতিপূরণ পাবেন, তার তালিকাও দিন কয়েক আগে ব্লক অফিসগুলিতে টাঙানো হয়। কিন্তু যা আবেদন জমা পড়েছিল, তার অনেক কম নাম তালিকায় ওঠে। প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা।
জেলা প্রশাসন অবশ্য জানাচ্ছে, তদন্তে দেখা গিয়েছে, ৮০ শতাংশ আবেদনকারীই ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য নন। সব আবেদনপত্র খতিয়ে দেখেই ক্ষতিপূরণ প্রাপকদের তালিকা তৈরি হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় ২৯টি ব্লকে ১ লক্ষ ৪২ হাজার নতুন আবেদনপত্র জমা পড়ে। আবেদনপত্র খতিয়ে দেখতে গিয়ে দেখা যায়, ৮০ শতাংশ আবেদনপত্র বৈধ নয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে একই ব্যক্তি ফের আবেদন করেছেন। কেউ কেউ টাকা পাওয়া সত্ত্বেও আবার স্ত্রী বা পরিবারের অন্য সদস্যের নামে আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন। এমনকী, একই পরিবারের ৪-৫ জন নতুন করে আবেদন করেছেন বলে নজরে এসেছে প্রশাসনের। আগে টাকা পাওয়ার পরে আবার নতুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়েও আবেদন করেছেন অনেকে।
ভাঙড় ২ ব্লকে নতুন করে আবেদন জমা পড়েছে ১৩,৯৭৮টি। এর মধ্যে ৬,৬৭১টি বৈধ আবেদনপত্র। ক্যানিং ২ ব্লকে ২০ হাজার নতুন আবেদনপত্র জমা পড়ে। তার মধ্যে ১০ হাজারের বেশি আবেদনপত্র বাতিল হয়ে গিয়েছে। তদন্তে যে সব আবেদনকারীর আবেদন মঞ্জুর হয়েছে, তাদের অ্যাকাউন্টে দ্রুত টাকা ঢুকে যাবে বলেই প্রশাসন সূত্রের খবর। এর আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় প্রায় ২ লক্ষ ২৬ হাজার সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত এবং প্রায় ৭ লক্ষ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির তালিকা জমা পড়েছিল। এদের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির জন্য কুড়ি হাজার টাকা এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির জন্য পাঁচ হাজার টাকা করে পেয়ে গিয়েছেন। বাকি ১০ শতাংশ মানুষের ক্ষতিপূরণের টাকা দ্রুত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যাবে বলে জানা গিয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “নতুন করে যে আবেদনপত্র জমা পড়েছে, তা খতিয়ে দেখা হয়েছে। তার মধ্যে ৮০ শতাংশেরও বেশি আবেদনপত্র সঠিক নয়। সব কিছু খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আমপানের প্রায় তিন মাস অতিক্রান্ত। এর মধ্যে অনেকেই সরকারি ক্ষতিপূরণের টাকা না পেয়ে নিজেদের উদ্যোগে বাড়িঘর মেরামত করে নিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে প্রশাসন কী ভাবে ক্ষতির পরিমাণ বিবেচনা করবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ওই কর্তার কথায়, “এ ক্ষেত্রে বাড়িতে নতুন টিন বা অ্যাসবেস্টস লাগানো হয়েছে কিনা দেখা হচ্ছে। নতুন টিন বা অ্যাসবেস্টসের বিল দেখা হচ্ছে। চেষ্টা করা হচ্ছে, সব কিছু খতিয়ে দেখার।”