প্রতীকী ছবি।
লকডাউনের জেরে ধান কাটার লোক পাচ্ছিলেন না চাষিরা। তার মধ্যে কালবৈশাখীর ঝড়-বৃষ্টিতে ধান নষ্ট হওয়ায় মাথায় হাত চাষিদের।
মঙ্গলবার সকালের ঝড়-বৃষ্টিতে বসিরহাটের বেশির ভাগ এলাকায় বোরো ধান চাষের ক্ষতি হয়। ক্ষতি হয়েছে বিভিন্ন ফসলেরও বলে জানান চাষিরা। ওই দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ আকাশ কালো করে শুরু হয় ঝোড়ো হাওয়া। সঙ্গে চলে জোর বৃষ্টি। কালবৈশাখীর দাপটে মাঠে জল জমে যায়। মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় অনেক বিঘা জমির ধানের মাথা মাটিতে নুইয়ে পড়ে। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাটে প্রায় ২ লক্ষ ৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। যার মধ্যে ৭০ শতাংশের উপর জমির ধান পাকতে শুরু করেছিল। বসিরহাট ১ ও ২, সন্দেশখালি, স্বরূপনগর, হিঙ্গলগঞ্জ এবং বাদুড়িয়া ব্লকের চাষিরা বোরো ধান চাষের উপর অনেকটা নির্ভরশীল। ওই সব এলাকায় আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ধান কাটা শুরু হওয়ার কথা ছিল। লকডাউনের সময়ে কী ভাবে মজুর মিলবে, কী ভাবে পাকা ধান কেটে ঘরে তোলা হবে— তা নিয়ে যখন চিন্তিত চাষিরা সে সময়ে ঝড়-বৃষ্টির দাপটে ফসল নষ্ট হওয়ার চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা।
বসিরহাটের অহাব গাজি, সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘এ বছর বোর ধানের ফলন ভালই হয়েছে। কিন্তু এখন ধান কাটার লোক মিলছিল না। কী ভাবে কি করব, বুঝতে পারছিলাম না। তার মধ্যে ঝড়-বৃষ্টিতে বড় ক্ষতি হয়ে গেল।’’
স্বরূপনগরে বাড়ি আমজেদ হোসেন, আক্রম গাজির। তাঁরা বলেন, ‘‘বোরো ধান কাটার আগে ঝড়-বৃষ্টির একটা আশঙ্কা প্রতি বছরই থাকে। তবে অন্য বার মজুর পাওয়ায় তেমন কোনও সমস্যা হয় না। কালবৈশাখীর কারণে মাটিতে লুটিয়ে পড়া গাছ দ্রুত কাটতে না পারলে কৃষকদের বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। এখন লকডাউন চলছে। কী ভাবে মজুর মিলবে তা বুঝতে পারছি না।’’ বসিরহাটের পিঁফা অঞ্চলের অলোক মণ্ডল, ফকির আলি, স্বপন মণ্ডলরা বলেন, ‘‘পাকা ধান সামান্য বৃষ্টিতে মাটির দিকে ঝুঁকে পড়ে। তার মধ্যে বৃষ্টির জন্য আমাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।’’ তবে বৃষ্টিতে ধান, তিল আনাজ চাষের ক্ষতি হলেও পাট চাষের ক্ষেত্রে উপকার হবে বলে জানান চাষিরা।