মোবাইল ব্যবহার ভাল করে শিখে নিতে হবে। কারণ এ বার ভোটে এসএমএসের মাধ্যমেই কর্মীদের মধ্যে খবরাখবর আদানপ্রদান করবে বলে ঠিক করেছে সিপিএম। এ ধরনের প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এ বারের বিধানসভা নির্বাচনে ভোট বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে দল। রবিবার কাকদ্বীপে দলের কর্মিসভায় এ কথা স্পষ্ট করে দেওয়া হল দলের নিচুতলার নেতাকর্মীদেরও।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক তথা দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তী জানান, এ বার শাসক দলের ভোট লুঠ আটকাতে মোবাইলকেই হাতিয়ার করা হচ্ছে। মহকুমা সদর লাগোয়া বা আরও প্রত্যন্ত এলাকায় দলের অনেক কর্মীর কাছেই মোবাইল চালানো এখনও কঠিন ব্যাপার। কিন্তু এখন তা কাটাতে হবে দ্রুত। এমনই নির্দেশ দিলেন সুজনবাবু। ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের লোকসভার সাংসদ মহম্মদ সেলিমও।
সুজনবাবু বলেন, ‘‘মোবাইল চালাতে পারেন, এরকম কয়েকজনকে বেছে আমরা মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করছি। তাতে প্রত্যন্ত এলাকা থেকেও উঠে আসবে ভোটের সময় প্রতিটি বুথে কী অবস্থা চলছে। এর ফলে আমরা দ্রুত নির্বাচন কমিশনের কাছে ঝামেলা গণ্ডগোলের খবর পৌঁছে দিতে পারব।’’
কী ভাবে কাজ করবে এই ব্যবস্থা?
দলীয় সূত্রের খবর, প্রতিটি বুথ থেকে কয়েকজন করে মোবাইল চালানোয় পটু কর্মীকে বেছে নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তাঁরা এসএমএস আদান প্রদান করে রিগিং, বুথজ্যাম, ছাপ্পা ভোটের মতো খবর পৌঁছে দেবেন দলের নেতাদের কাছে। শেষ পর্যন্ত তা পৌঁছে যাবে দলের শীর্ষ নেতাদের কাছেও। কর্মিসভায় জানানো হয়েছে, আর কয়েকদিনের মধ্যেই ভোটের দিন ঘোষণা হওয়ার কথা। ঘোষণা হলেই এই ব্যবস্থা চালু করবেন তাঁরা। এ ভাবে প্রত্যেকটি বুথ থেকে গত নির্বাচন থেকে প্রায় ৫০টি করে ভোট বাড়ানোর লক্ষ্য রাখছে দল। দলের কোন কোন কর্মী ওই ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকবেন তা গোপন থাকবে। গোপন রাখা হচ্ছে সেইসব কোড ওয়ার্ডও যা দিয়ে একটি বুথের অবস্থা আঁচ করে এসএমএস পাঠানো হবে। যাঁরা এ সব পাঠাবেন তাঁরা বুথের ভেতরে থাকবেন, না বাইরে তাও নিজেদের মধ্যেই রাখতে চান দলের নেতারা। কাকদ্বীপের বিবেকানন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের এক সিপিএম নেতা বলেন, ‘‘সাধারণ মোবাইল ব্যবহার করি। অত ভাল ব্যবহার করতে পারি না। আমি বেশ কয়েকটি বুথের দায়িত্বে রয়েছি, সেখানে মোবাইল সংক্রান্ত কাজের জন্য এই প্রজন্মের কিছু ছেলে ঠিক করে দিয়েছি।’’
কাকদ্বীপের ওই কর্মিসভায় আরও কয়েকদফা ভোট দাওয়াই ঘোষণা করেন সুজনবাবুরা। তার মধ্যে দলের বিক্ষুব্ধ কর্মীদের রাগ কমিয়ে দলে ফেরানো, বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মীদের দলে টানা, স্থানীয় সমস্যার উপর জোর দেওয়া, প্রয়োজনে মানুষের ব্যক্তিগত সমস্যায় সাহায্য করা, প্রত্যেকটি বুথের হালহকিকত জানতে খাতা এবং ডায়েরি রাখার অভ্যাস করা, রেশনকার্ডের মতো ইস্যুতে বিক্ষোভ দেখানোর মতো কাজ করতে বলেছেন সুজনবাবুরা।
সভায় সাংসদ মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘কী ভাবে সিঙ্গুর থেকে মমতা হাত গুটিয়ে দায় এড়াচ্ছে, কী ভাবে বামেদের আমলে অনুমোদন পাওয়া কাজগুলিকে নিজেদের বলে চালাচ্ছে শাসক দল এগুলি মানুষকে বোঝাতে হবে।’’