তৃণমূলে এলেন সাত্তার।
গুঞ্জন ছিলই। শেষমেশ দল বদল করে তৃণমূলে যোগ দিলেন সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাত্তার মোল্লা। শুক্রবার বিকেলে জীবনতলায় তাঁর হাতে দলের পতাকা তুলে দেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। এ দিন ওই অনুষ্ঠানে শোভনবাবু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলার ভাইস চেয়ারম্যান শক্তি মণ্ডল, সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক জীবন মুখোপাধ্যায়, সোনারপুর উত্তরের বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম, ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক ও জেলা যুব সভাপতি সওকত মোল্লা প্রমুখ।
এ দিন সাত্তারের নেতৃত্বে ভাঙড়ের চন্দনেশ্বর, বোদরা, শাঁকশহর অঞ্চলের সিপিএমের লোকাল কমিটি, জোনাল কমিটির সদস্য-সহ প্রায় ৭ হাজার সিপিএম কর্মী-তৃণমূলে যোগ দেন। সাত্তারের নেতৃত্বে সিপিএমের নেতা-কর্মীরা তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় ওই এলাকা কার্যত ‘সিপিএম শূন্য’ হয়ে যাবে বলে মনে করছে তৃণমূলের একাংশ। সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়ে এলাকা ছাড়া করে, ভয় দেখিয়ে দল বাড়ানোর খেলায় মেতেছে তৃণমূল। তাই অনেকে বাধ্য হয়ে তৃণমূলে নাম লেখাচ্ছেন।’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০০৯ সালে ভাঙড়ের চন্দনেশ্বরের তৃণমূল কর্মী সাকবত খান চৌধুরী খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত ছিলেন সাত্তার। মামলাটি বিচারাধীন। আদালতের নির্দেশে সাত্তার দীর্ঘ দিন ধরে জেলায় ঢুকতে পারছিলেন না। অন্য দিকে, ১৯৯৫ সালে ভাঙড়ের কংগ্রেস নেতা ইউসুফ মোল্লা খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে আলিপুর আদালতে তাঁর সাজা ঘোষণা হয়। পরে হাইকোর্টে জামিন পান। এ ছাড়া ওই সিপিএম নেতার বিরুদ্ধে একাধিক রাজনৈতিক সংঘর্ষের অভিযোগ রয়েছে।
তা হলে কী মামলা-মোকদ্দমা থেকে অব্যাহতি পেতেই যোগ দিলেন শাসক দলে? এই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে সাত্তার এ দিন বলেন, ‘‘আমি গত পাঁচ বছরে যে উন্নয়ন দেখেছি, তা আগের জমানায় চৌত্রিশ বছরে হয়নি। মানুষের জন্য কাজ করতে এবং এই উন্নয়নে সামিল হতে দলবল নিয়ে তৃণমূলে যোগ দিলাম।’’ শোভনবাবুর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়ন দেখে সাত্তার মোল্লারা এই কর্মযজ্ঞে সামিল হতে চাইছেন। আমরাও দলের পক্ষ থেকে তাঁদের স্বাগত জানাই।’’ শোভনবাবুর দাবি, সামনের পঞ্চায়েত ও পুরভার নির্বাচনে যাদবপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কোথাও বিরোধীদের ঘেঁষতে দেওয়া হবে না। তাঁর কথায়, ‘‘পুরো বিরোধী শূন্য করে দেব।’’ — ছবি: সামসুল হুদা।