বিরোধী শূন্য পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করতে সিপিএম ও কংগ্রেস সদস্যদের দলে নেওয়া শুরু করল তৃণমূল।
সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা ব্লকের মালিপোতা গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫ নম্বর আসনে জয়ী সিপিএমের মহিমা মণ্ডল তৃণমূলে যোগ দেন। মহিমাদেবী বনগাঁর পুরপ্রধান তথা তৃণমূলের বাগদা ব্লকের পর্যবেক্ষক শঙ্কর আঢ্যের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দিলেন। প্রশাসনের কাছেও লিখিত ভাবে মহিমা তাঁর দল ছাড়ার কথা জানিয়েছেন। শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘মহিমা এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে দলে যোগ দিতে চেয়েছিলেন। দলের নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে তাঁকে দলে নেওয়া হয়েছে।’’
মহিমার বাড়ি মালিপোতা গ্রাম পঞ্চায়েতের দিয়াড়া গ্রামে। পঞ্চায়েত ভোটে তিনি শাসকদলকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন। কেন দল ছাড়লেন? মহিমা বলেন, ‘‘দিয়াড়া গ্রামে কোনও উন্নয়ন হয়নি। এলাকার উন্নয়ন করতে তৃণমূলে যোগ দিয়েছি। আমাকে কেউ কোনও ভয় দেখায়নি। স্বেচ্ছায় দল ছেড়েছি।’’ তবে তাঁর দলে যোগ দেওয়া নিয়ে এলাকার তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
দলীয় সদস্য যে দল ছেড়েছেন তা মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত জানতেন না সিপিএম এর জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবতী। তিনি বলেন, ‘‘বাগদার কোনও জয়ী সদস্য দল ছেড়েছেন বলে এখনও আমি জানি না। তবে জয়ী প্রার্থীদের পুলিশ ও তৃণমূলের তরফে ভয় দেখানো হচ্ছে বলে শুনেছি। হুমকি দিয়ে তৃণমূলে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। শাসকদলের তরফে প্রলোভনও দেওয়া হচ্ছে।’’ পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, দলের কোনও জয়ী সদস্য যদি তৃণমূলে যোগ দেন, দল তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবে। দল তাঁদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখবে না।
তৃণমূল অবশ্য হুমকি ও ভয় দেখানোর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, জেলাতে বিরোধী শূন্য পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করতে প্রয়োজনে রাজ্য কমিটির অনুমতি নিয়ে সিপিএম ও কংগ্রেসের জয়ী সদস্যদের দলে আনবেন। তবে সে ক্ষেত্রে জয়ী প্রার্থীকে তৃণমূলের কাছে আবেদন জানাতে হবে। তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ যাঁরা ভোটে দাঁড়িয়ে জয়ী হয়েছেন তাঁদের দল সরাসারি ফিরিয়ে নেবে। জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘যে সব সিপিএম ও কংগ্রেসের জয়ী সদস্যেরা দলে আসবেন তাঁদের বক্তব্য আমরা ভিডিও ক্যামারাতে তুলে রাখছি।’’
মালিপোতা গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন ২৪ টি। পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল পেয়েছে ১২ টি। বিজেপি ৮। এ ছাড়া কংগ্রেস সিপিএম ও নির্দল প্রার্থীরা মিলে পেয়েছে আরও ৪টি আসন। স্বাভাবিক ভাবে বিরোধীরা যদি একজোট হয় তা হলে আসন সংখ্যা তৃণমূলের সমান হয়ে যেত। সেক্ষেত্রে তৃণমূলই বোর্ড গঠন করত তা জোর দিয়ে বলা যেত না। তবে এখন আর সেই সম্ভাবনা থাকল না।