পণের দাবিতে প্রথম পক্ষের স্ত্রীর উপরে অত্যাচার চলত। তিনি বাড়ি ছেড়ে বেঁচেছিলেন। দ্বিতীয় বিয়ের দিন কয়েক পর থেকে পণের দাবিতে তাঁর উপরেও শুরু হ।য় অত্যাচার। শেষমেশ, দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী সঞ্জুরা বিবিকে ঘরের দরজা বন্ধ করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরেছিল জাহাঙ্গির সাহাজি। ঘরে ছিল প্রথম পক্ষের ছেলে, বছর সাতেকের ইমরান হাসান। মারা যায় সে-ও।
২০০৬ সালের এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত, সঞ্জুরার স্বামী জাহাঙ্গির সাহাজির ফাঁসির আদেশ হল বারাসত আদালতে। শনিবার বারাসত জেলা আদালতের বিচারক (ফাস্ট ট্র্যাক-৫) বিবেকানন্দ শূর ওই আদেশ শুনিয়েছেন। খুনের ঘটনায় জড়িত জাহাঙ্গিরের মা রোশেনারা বিবিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
মামলার সরকারি আইনজাবী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘মামলায় মোট ৩৩ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। জাহাঙ্গির এত দিন জেলেই ছিল। তার মা অবশ্য জামিনে মুক্ত ছিল।’’
অশোকনগরের খোশদেলপুর এলাকার বাড়ি জাহাঙ্গিরের। রাতে সেখানেই ছেলে ইমরানকে নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন সঞ্জুরা। বাইরে থেকে ঘর বন্ধ করে আগুন ধরিয়ে দেয় জাহাঙ্গির।
তার প্রথম স্ত্রী লুসিয়া বিবি হাবরা থানায় স্বামী ও শাশুড়ির নামে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ জানায়, ভিডিও হলের মালিক জাহাঙ্গির প্রথম পক্ষের দু’টি সন্তান। পণের দাবিতে স্ত্রীকে মারধর করত স্বামী-শাশুড়ি। অভিযোগ, লুসিয়াকেও খুনের চেষ্টা করেছিল জাহাঙ্গির-রোশেনারা।
জোড়া খুনের ঘটনার বছরখানেক আগে লুসিয়া দুই সন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে যান। পরে ছেলে ইমরানকে নিজের কাছে নিয়ে আসে জাহাঙ্গির।
রফিকুল বলেন, ‘‘খুনের ঘটনার মাত্র একুশ দিন আগে দেগঙ্গার বাসিন্দা সঞ্জুরাকে বিয়ে করেছিল জাহাঙ্গির। তাঁকেও পণের টাকার জন্য মারধর করা শুরু করেছিল। শেষমেশ পুড়িয়ে মারা হয়। ছেলে তা দেখে ফেলায় তাকেও মেরে ফেলে ওরা।’’