প্রতীকী ছবি।
মুম্বইয়ে কর্মসূত্রে থাকতেন বাগদার সিন্দ্রাণী এলাকার বাসিন্দা এক যুবক। দিন কয়েক আগে বাড়ি ফিরেছেন। স্বাস্থ্যকর্মীরা ও গ্রামবাসী তাঁকে ১৪ দিন বাড়ি থাকতে অনুরোধ করেছিলেন। অভিযোগ, ওই যুবক বাড়িতে না থেকে এলাকায় অবাধে ঘোরাঘুরি শুরু করেছিলেন। বাসিন্দারাদের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পেরে বাগদা থানার পুলিশ বৃহস্পতিবার যুবককে গ্রেফতার করল।
লকডাউন পরিস্থিতি উপেক্ষা করে বেআইনি ভাবে ঘোরাঘুরির অভিযোগে বনগাঁ মহকুমায় এই প্রথম কেউ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন। বনগাঁর পুলিশ সুপার তরুণ হালদার বলেন, ‘‘লকডাউন পরিস্থিতিতে আইন ভেঙে কেউ যদি উদ্দেশ্যহীন ভাবে এলাকায় ঘোরাঘুরি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে এখন থেকে।’’ পুলিশের এই সিদ্ধান্তে খুশি এলাকার মানুষ। কারণ ভিন রাজ্য বা বিদেশ থেকে ফিরে অনেকেই বাড়িতে গৃহবন্দি থাকছেন না। এর ফলে বাসিন্দারা আরও বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। অভিযোগ, বাইরে থেকে বাড়ি ফিরে আসা একাংশের মানুষকে গ্রামবাসী ক্লাব বা স্বাস্থ্য দফতর থেকে একাধিকবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তাঁরা বাড়ি থাকছেন। দিন কয়েক আগে ওড়িশাতে কর্মরত দুই যুবক বনগাঁ শহরের বাড়িতে ফিরেছেন। পাড়াপ্রতিবেশীরা তাঁদের বাড়ি থাকতে অনুরোধ করলে তাঁরা উল্টে হুমকি দিয়েছে। বাইরে ঘোরাঘুরিও বন্ধ করেনি। বাগদার বাসিন্দারা জানালেন, বিদেশ থেকে ফিরে আসা লোকজনকে ঘরে থাকতে অনুরোধ করা হলে তাঁরা দাবি করছেন, তাঁরা সুস্থ। তা হলে কেন তাঁরা ঘরে থাকবেন।
গ্রামবাসীর অভিজ্ঞতা, পাড়া প্রতিবেশীদের চাপে ফিরে আসা অনেকেই, বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল বাগদা ব্লক গ্রামীণ হাসপাতাল, চাঁদপাড়া ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে গিয়ে বহির্বিভাগে চিকিৎসক দেখাচ্ছেন। চিকিৎসকের করে দেওয়া প্রেসক্রিপশন নিয়ে তাঁরা গ্রামে ফিরে বাসিন্দাদের দেখাচ্ছেন, তাঁরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নয়। গ্রামের মানুষের সচেতনার অভাব রয়েছে। সেই সুযোগে বাড়ি ফেরা একাংশের মানুষ চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে গ্রামে ঘুরছেন। মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করছেন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে , আবার এমন ঘটনাও দেখা যাচ্ছে, হাসপাতালে গিয়ে রোগীরা চিকিৎসকদের উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করছেন। তাঁরা চিকিৎসকদের কাছে দাবি করছেন, তাঁরা ফিট এই মর্মে শংসাপত্র দিতে। যা চিকিৎসকদের তরফে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। যা নিয়ে গোলমাল হচ্ছে রোগীদের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। দিন কয়েক এমনই ঘটনা ঘটেছে চাঁদপাড়া ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে। শেষে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।