প্রতীকী ছবি
বাজারে বা মেলায় পান-বিড়ি বিক্রি করি। বাড়িতে দুই ছেলেমেয়ে, বৃদ্ধা মা ও স্ত্রী রয়েছেন। একমাত্র আমিই রোজগেরে সদস্য। আমাদের কোনও চাষজমিও নেই। সরকারি সাহায্যে কয়েক বছর আগে একটি ঘর পেয়েছি। পান-বিড়ি বিক্রি করে যে সামান্য আয় করি তা দিয়েই সংসার চালাই। এর মধ্যে ছেলেমেয়ের পড়ার খরচ এবং মায়ের চিকিৎসার খরচও থাকে। যে দিন থেকে লকডাউন ঘোষণা হল সেই দিন থেকেই আমার রোজগার বন্ধ। আগে প্রত্যেকদি ন বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে বাইলানি বাজারে টেবিল পেতে পান-বিড়ি বিক্রি করতাম। দুপুর তিনটে থেকে রাত আটটা পর্যন্ত। একশো-দেড়শো টাকার বিক্রি হত। সপ্তাহে দু’দিন হাট বসত। সেই দু’দিন একটু বেশি বিক্রি হত। এ ছাড়াও এই সময়টায়, এই চৈত্র-বৈশাখ মাসে আমাদের এখানে বেশ কয়েকটা মেলা হয়। বিশপুরের চড়ক মেলা, দুর্গাপুরের গঙ্গামেলা, দক্ষিণ বিশপুরের হাজরা কালীমেলা। এই মেলাগুলিতে কখনও-কখনও হাজার থেকে ২ হাজার টাকার বিক্রিবাটাও হত। সারা বছর তাই এই সময়টার দিকেই তাকিয়ে থাকতাম। কিন্তু লকডাউনের জেরে এ বার সব বন্ধ। হাতে একদম টাকা নেই। ভরসা রেশনের চাল-আটা। আর কখনও-সখনও পড়শিদের থেকে পাওয়া একটু-আধটু আনাজ। মায়ের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা লেগেই থাকে। ডাক্তারের কাছে গিয়ে ওষুধ আনতে হয়। এখন খাওয়ার টাকাই নেই, এরপরে ওষুধ আনব কী করে? কষ্ট করে বাচ্চাদের জন্য মাঝেমধ্যে একটু-আধটু খাবার কিনে আনতাম। কিন্তু অনেক দিন হল বাচ্চাদের জন্য কিছু কিনতেই পারিনি। ওরা তিন বেলা ভাত ছাড়া আর কিছু পাচ্ছে না।
(হাসনাবাদ থানার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা)