নষ্ট: পড়ে রয়েছে ফসল। নিজস্ব চিত্র
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া কয়েক হাজার বিঘে কৃষিজমি রয়েছে বনগাঁ মহকুমায়। সীমান্তে কাঁটাতারের বাইরে অনেক চাষির জমি আছে। স্বাভাবিক সময়ে চাষিরা নিজেদের পরিচয়পত্র বিএসএফ জওয়ানদের দেখিয়ে কাঁটাতারের গেট দিয়ে কৃষিজমিতে গিয়ে চাষবাস করেন। নির্দিষ্ট সময়ের পরে ফিরেও আসেন।
করোনা-সংক্রমণ ঠেকাতে কেন্দ্র সরকারের তরফে সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়েছে। চাষিরা জানিয়েছেন, বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কাঁটাতারের গেট। ফলে কাঁটাতারের বাইরে থাকা জমিতে চাষবাস করতে যেতে পারছেন না কেউ। এর ফলে বিপাকে পড়েছেন মহকুমার হাজার হাজার চাষি। তাঁদের বক্তব্য, কাঁটাতারের বাইরে থাকা জমিতে ধান, তিল, আনাজ চাষ করা হয়েছে। ওই সব জমিতে এখন সেচের মাধ্যমে জল দিতে না পারলে সব নষ্ট হয়ে যাবে।
এই পরিস্থিতিতে চাষিরা আন্দোলনও শুরু করেছেন জমিতে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে। মঙ্গলবার সকালে বনগাঁর দক্ষিণ চড়ুইগাছি এলাকার চাষিরা দল বেঁধে বনগাঁর বিডিওর কাছে স্মারকলিপি দেন। গোপালচন্দ্র মণ্ডল নামে এক চাষি বলেন, ‘‘কাঁটাতারের বাইরে আমার নিজের সাত বিঘে জমি আছে। তাতে ধান, তিল, আনাজ চাষ করেছি। এখন ধানের শিষ বের হচ্ছে। সেচের জল দিতে না পারলে ধান নষ্ট হয়ে যাবে। তীব্র গরমে সেচ দিতে না পারলে তিল, আনাজ চাষও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সোমবার থেকে বিএসএফ আমাদের কাঁটাতারের বাইরে থাকা জমিতে যেতে দিচ্ছে না।’’
দক্ষিণ চড়ুইগাছি এলাকাতেই কাঁটাতারের বাইরে প্রায় ৮০০ বিঘে ধানের জমি আছে। বনগাঁ মহকুমায় সীমান্ত এলাকা প্রায় ১২৬ কিলোমিটার। তারমধ্যে প্রায় ৯৩ কিলোমিটার পথে কাঁটাতার রয়েছে। ওই কাঁটাতারের বাইরে রয়েছে কৃষিজমি। বনগাঁ, বাগদা, গাইঘাটা সর্বত্র চাষিরা খেতে যেতে না পেরে সমস্যায় দিন কাটাচ্ছেন। মঙ্গলবার একই দাবিতে বাগদা থানার বয়রা কুলনন্দপুরের গ্রামের চাষিরা বাগদা থানা পুলিশের কাছে দ্বারস্থ হন। সেখান থেকে ফিরে তাঁরা বাগদা-বনগাঁ সড়কের নোমচাপোতায় রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে পথ অবরোধ করেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছন বাগদার বিধায়ক দুলাল বর ও বাগদা থানা পুলিশl ৩০ মিনিট অবরোধ চলার পরে কৃষকদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দেওয়া হয়।
বিধায়ক দুলাল বর ও বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ চাষিদের সমস্যার কথা জানিয়েছেন বিএসএফের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। গোপাল বলেন, ‘‘বিএসএফ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে। তবে বাংলাদেশ থেকে কেউ যাতে চলে আসতে না পারেন, সেটাও চাষিদের দেখতে হবে বলে বিএসএফ কর্তারা জানিয়েছেন।’’ প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘চাষিদের সমস্যা সমাধান করতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’