থার্মাল স্ক্রিনিং চলছে হাবড়ায়। ছবি: সুজিত দুয়ারি
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে জ্বর সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে হাবড়া পুরসভা। রোজই পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিবারের সদস্যদের থার্মাল গান দিয়ে তাপমাত্রা মাপছেন।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, হাবড়া শহরে প্রায় ৪০ হাজার পরিবারের বাস। স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা ৪৭ জন। স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা পর্যায়ক্রমে বাড়ি গিয়ে লোকজনের শরীরের তাপমাত্রা মাপছেন। হাবড়া পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিক মানস দাস বলেন, ‘‘প্রথম পর্যায়ে ৪০ হাজার ২৫৬টি পরিবারে গিয়ে একবার করে জ্বরের সমীক্ষার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সাধারণত শরীরের তাপমাত্রা ৯৮.৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার উপরে থাকলে তাকে আমরা জ্বর হিসাবে গণ্য করি। কোনও পরিবারের এমন জ্বরের রোগী থাকলে তাঁদের আমরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠাচ্ছি।’’পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বাণীপুর, জয়গাছি এবং আক্রামপুর এলাকায় তিনটি পৌর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। বাড়িতে গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা যদি দেখেন, কারও শরীরে জ্বর রয়েছে, তা হলে তাঁদের এই তিনটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে এসে ওষুধপত্র দেওয়া হচ্ছে। দু’একদিন পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। যদি দেখা যায়, দু’একদিন পরে কোনও রোগীর জ্বর কমেনি, শ্বাসকষ্ট বা কাশি রয়েছে— তা হলে তাঁদের হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের ফিভার ক্লিনিকে পাঠানো হচ্ছে। প্রয়োজনে সেখান থেকে কারও কারও লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে।
মানস বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত ১৮ জনকে হাসপাতালের ফিভার ক্লিনিকে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দু’জনের লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। একজন পজিটিভ এবং একজনের নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে।’’
পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগেই হাবড়া শহরের বাজারগুলিতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের শরীরের তাপমাত্রা মাপা হয়েছে। বাজার জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। এখন চলছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে জ্বর অনুসন্ধানের কাজ। স্বাস্থ্যকর্মীরা সুরক্ষা নিয়েই বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন। বাইরে থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিক বা অন্য কেউ শহরের বাড়িতে এলেই তাঁদের হোম কোয়রান্টিনে রাখা হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁদের উপরে নজর রাখছেন। এখনও পর্যন্ত ৫৪৪ জন মানুষ বাইরে থেকে হাবড়া শহরে ফিরেছেন। হাবড়া শহরের বাসিন্দা এক বৃদ্ধা করোনায় আক্রান্ত হয়ে বারাসতের কোভিড হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। পুর স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, শনিবার রাতে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন, তিনি স্থিতিশীল আছেন। শহরবাসী চাইছেন, তিনি সুস্থ হয়ে দ্রুত বাড়ি ফিরে আসুন।