Coronavirus in West Bengal

নমুনা দিয়ে এসে ঘোরাঘুরি, ছড়াচ্ছে সংক্রমণ

চিকিৎসকেরা বলছেন, শুধুমাত্র অসেচতনতার জন্য আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।

Advertisement

নবেন্দু ঘোষ

শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২০ ০৫:০২
Share:

প্রতীকী ছবি

করোনা-আতঙ্ক দিকে দিকে। কিন্তু প্রয়োজনীয় সচেতনতা নেই অনেকেরই। মাস্ক ছাড়া ঘোরাঘুরি, লকডাউন ভাঙার প্রবণতা, ভিড় করা— কমেনি এখনও। যে সব ব্যক্তিদের বাড়িতে নিভৃতবাসে থাকার কথা, উপসর্গ নেই বলে তাঁরা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠছে।

Advertisement

লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য দেওয়ার পরে রিপোর্ট আসতে দু’দিন তারও বেশি সময় লাগছে। তার মধ্যে অনেকেই খেয়ালখুশি মতো ঘুরছেন। যতক্ষণে তাঁর পজ়িটিভ রিপোর্ট আসছে, ততক্ষণে তাঁর সরাসরি সংস্পর্শে আসছেন আরও অনেকেই। সম্প্রতি তেমনই বহু ঘটনা নজরে এসেছে স্বাস্থ্য দফতরের। তেমনই একটি ঘটনা হেমনগর থানা এলাকার।

হেমনগরে যোগেশগঞ্জের এক বাসিন্দা জানান, তাঁর এবং মায়ের ৮ জুলাই জ্বর হয়। ১৩ তারিখে করোনা-পরীক্ষা করাতে মাকে বাইকে নিয়ে ১৩ তারিখে স্যান্ডেলবিল হাসপাতালে যান। সেখানে হাসপাতালের লাইনে অনেকের সঙ্গে দাঁড়াতে হয়েছিল তাঁদের। তবে সেখানে শারীরিক দূরত্ব বজায় ছিল বলে দাবি ওই যুবকের। প্রথমে চিকিৎসকেরা লালারসের নমুনা সংগ্রহে রাজি ছিলেন না। কিন্তু কয়েক দিন ধরে জ্বরের কথা শুনে পরীক্ষার অনুমতি মেলে। যুবকটির দাবি, হাসপাতাল থেকে তাঁকে বাড়িতে নিভৃতবাসে থাকার কোনও পরামর্শ দেওয়া হয়নি।

Advertisement

তাই তিনি বাড়িতে এসে যোগেশগঞ্জ বাজারে নিজের সারের দোকানে বসেছেন। খদ্দেরদের সঙ্গে লেনদেন করেছেন, বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরেছেন। ১৬ জুলাই বিকেলে ফোন করে প্রথমে বিডিও অফিস থেকে, পরে হেমনগর থানা থেকে জানানো হয়, তিনি করোনা-আক্রান্ত। তারপরে তাঁর বাড়ি সিল করে দেওয়া হয়। বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা চলছিল। পরে হিসেব কষে দেখা যায়, আক্রান্ত যুবক পরিবারের সদস্য তো বটেই, পাঁচ বন্ধু, দোকানের দুই কর্মী, আত্মীয় মিলিয়ে মোট ১১ জন তাঁর সরাসরি সংস্পর্শে এসেছিলেন। তাঁদের উপর নজর রাখা হয়। এ দিকে, স্থানীয় বাসিন্দারা আপত্তি করায় ১৮ তারিখ আক্রান্তকে বাড়ি থেকে বসিরহাটের কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এর মধ্যে গত ওই যুবকের দোকানের এক কর্মী অসুস্থ হওয়ায় তাঁরও করোনা-পরীক্ষা হয়। ১৮ জুলাই তাঁর রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। তিনি বসিরহাটে সেফ হোমে যান। গত সোমবার সারের দোকানের মালিক বাড়ি ফিরেছেন। চিকিৎসকেরা বলছেন, শুধুমাত্র অসেচতনতার জন্য আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।

হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক অঙ্কুর কর্মকার বলেন, “সব রোগীকেই করোনা-পরীক্ষার পরে চিকিৎসকেরা প্রেসক্রিপশনে ৭-১৪ দিন বাড়িতে নিভৃতবাসে থাকতে।"

একই ঘটনা ঘটেছে মিনাখাঁ ব্লকেও। সেখানেও কয়েক দিন আগে যে ৫ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের প্রাথমিক সংস্পর্শে এসেছেন ৭৫ জন। এই প্রবণতা না কমলে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement