পদক্ষেপ: মাস্ক না পরে বেরোলে পরিয়ে দেওয়া হল পথেই। বনগাঁয় ছবিটি তুলেছেন নির্মাল্য প্রামাণিক
রোজই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এ বার ৫০ পেরোল বনগাঁ ব্লকে। কিছু জায়গায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও খোলা হচ্ছে বাজার।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ ব্লকে আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন, গ্রামবাসী, পরিযায়ী শ্রমিক, পুলিশ কর্মী, পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির জনপ্রতিনিধি। করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়ায় সচেতন মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। মানুষের একাংশ অবশ্য বেপরোয়া। তাঁরা মাস্ক ছাড়াই বাজারহাটে ঘোরাঘুরি করছেন। গ্রামের রাস্তায় বেশির ভাগ মানুষকেই মাস্ক পরতে দেখা যাচ্ছে না। অনেকে মানছেন না শারীরিক দূরত্ববিধিও। পুলিশ-প্রশাসনের এ বিষয়ে কোনও হেলদোল নেই বলেও অভিযোগ উঠছে। তবে সচেতনতা বাড়াতে সোমবার বনগাঁ পুরসভার স্বাস্থ্যদফতরের পক্ষ থেকে মাস্ক না পরে পথে বেরোনো মানুষকে গোলাপ ফুল দেওয়া হয়েছে। মাস্কও পরানো হয়।
সোমবারই বনগাঁ ব্লকের চার ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দু’জন পরিযায়ী শ্রমিক। একজনের আত্মীয় আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। আর একজন চিরুনি কারখানার মালিক। সকলের বাড়ি কালুপুর এবং ছয়ঘরিয়া পঞ্চায়েত এলাকায়। বনগাঁর বিএমওএইচ মৃগাঙ্ক সাহা রায় বলেন, ‘‘সোমবার ৪ জনের রিপোর্ট এসেছে। সকলেই করোনা পজ়িটিভ। বনগাঁ ব্লক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৫২। এ দিন আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা মানুষকে হোম আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। তাঁদের উপরে নজর রাখা হচ্ছে। প্রয়োজনে তাঁদের লালারস সংগ্রহ করা হবে।’’ বনগাঁ পুরসভা এলাকায় রবি ও সোমবার চারজন করেনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পুরপ্রশাসক শঙ্কর আঢ্য। তিনজনেরই কলকাতায় যোগাযোগ ছিল। বাগদা ব্লকে রবিবার দু’জন করোনা পজ়িটিভ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাগদার বিএমওএইচ প্রণব মল্লিক।
অশোকনগরে লকডাউন চলছে। বাজারহাট, দোকানপাট সব বন্ধ। কিন্তু লকডাউন উপেক্ষা করে অস্থায়ী বাজার বসছে। বুধবার থেকে হাবড়া, অশোকনগর ও গোবরডাঙা শহর ও গ্রামীণ এলাকায় ব্যবসায়ী সংগঠনের তরফে ওষুধের দোকান ও দুধ সরবরাহ ছাড়া পুরোপুরি ব্যবসা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রথম দিকে ভাল সাড়া ফেলেছিল ব্যবসায়ীদের ডাক। তবে ইদানীং সেই কর্মসূচিতে বেশ কিছু জায়গায় ভাটা পড়ল। শহরাঞ্চলের গলিতে খোলা রয়েছে বেশ কিছু দোকান। সেখানে ভিড় করছেন মানুষ। বেশ কয়েক জায়গায় রাস্তার উপরে বসানো হয়েছে দোকান।
হাবড়া ও অশোকনগরের গ্রামীণ এলাকাতেও কিছু দোকান খোলা আছে বলে চোখে পড়েছে। হাবড়ার ফুলতলা এলাকায় রাস্তা দখল করে অস্থায়ী বাজারে মাছ-মাংস, আনাজ বিক্রি হচ্ছিল। ব্যবসায়ী সংগঠনের অনুরোধে সেই বাজার তুলে দেয় পুলিশ।
অশোকনগর শহর থেকে ভুরকুন্ডা পঞ্চায়েত এলাকায় যাওয়ার প্রধান রাস্তার পাশে পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন কাঁকপুল এলাকায় রাস্তার উপরেই বসেছে অস্থায়ী বাজার। পাশাপাশি দিঘিরহাট, সেনডাঙা, বিড়া, গুমা, বদর এলাকাতেও অস্থায়ী দোকান খুলে বসেছেন অনেকে। অনেকেই দূরত্ববিধি মানছেন না বলে অভিযোগ। মাস্ক ছাড়া ঘোরাঘুরি করছেন।
এরই মধ্যে অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভা এলাকায় নতুন করে ৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পুরপ্রশাসক প্রবোধ সরকার। সোমবার হাবড়া শহরে বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক মানুষকে মাস্ক পরতে অনুরোধ করেছেন। মাস্ক দিয়েছেন তিনি।