প্রতীকী চিত্র
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকে একশো পেরোলো। আপাতত সংখ্যাটা ১০৯। তবে এখনও সুন্দরবন ঘেঁষা কালীতলা পঞ্চায়েত এবং গোবিন্দকাটি পঞ্চায়েত এলাকায় করোনা থাবা বসাতে পারেনি। এই দুই পঞ্চায়েত এলাকা থেকে এখনও একজনও করোনা আক্রান্ত রোগীর খবর পাওয়া যায়নি। যোগেশগঞ্জ পঞ্চায়েত এলাকার কয়েকজন কিছু দিন আগে করোনা আক্রান্ত হলেও তারপর নতুন করে আর কেউ আক্রান্ত হননি। অন্যান্য বহু এলাকার তুলনায় এখনও সংক্রমণ সে দিক থেকে অনেকটাই কম সুন্দরবনের এই দ্বীপ এলাকায়। রূপমারি পঞ্চায়েত এলাকায় প্রথম দিকে দু’একজন করোনা আক্রান্ত হলেও গত বেশ কয়েক মাস ধরে এই পঞ্চায়েত এলাকার আর কেউ নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়নি।
করোনার প্রকোপ শুরুর প্রথম দুই মাস, অর্থাৎ মার্চ-এপ্রিলে হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকে থেকে একটিও করোনা আক্রান্তের খবর সামনে আসেনি। পরিযায়ী শ্রমিকদের আনাগোনা শুরু হওয়ার পরে এবং বাইরে থেকে আসা মানুষদের মধ্যে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। মে মাসে এমনই দু’জন করোনা আক্রান্তের খবর সামনে আসে। জুন মাসেও মাত্র ৬ জন করোনা আক্রান্ত হন। তবে জুলাই মাস থেকে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে। জুলাইয়ে আক্রান্ত হন ৩২ জন। অগস্ট মাসে এসে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে হয় ৪০। সেপ্টেম্বর মাসে এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২৯ জন। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, এখনও কোনও করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়নি। সকলেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। বেশিরভাগ করোনা আক্রান্তেরা বাড়িতে থেকেই সুস্থ হয়েছেন। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অঙ্কুর কর্মকারের দাবি, মে মাস থেকে ক্রমশ বাড়ছে টেস্ট পরিমাণ। এখন সাপ্তাহিক কমপক্ষে আরটিপিসিআর পদ্ধতিতে ৩৫০ জনের পরীক্ষা করা হয়। এ ছাড়া, র্যা পিড অ্যান্টিজেন পদ্ধতিতে ৪২০ জনের পরীক্ষা করা হয়। এই মুহূর্তে এই ব্লকে করোনা অ্যাক্টিভ কেস ৩১। এই বিষয়ে অঙ্কুর বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত এ মাসে যতজন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তা দেখে মনে হচ্ছে এ মাসে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা গত মাসের থেকে কম হতে পারে। তবে পরীক্ষা কমেনি। যেটা একটা ভাল দিক।” তবে তিনি আরও জানান, হিঙ্গলগঞ্জ ও সান্ডেলেরবিল পঞ্চায়েত এলাকা থেকে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা সামনে আসছে। যেমন, গত এক সপ্তাহে শুধু হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েত এলাকা থেকে ৮ জন করোনা আক্রান্তের খবর এসেছে।
অন্য দিকে, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হাসনাবাদ ব্লকে ৩১৬-তে পৌঁছে গেল। ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, মার্চ ও এপ্রিল মাসে এই ব্লকেও করোনা আক্রান্তের হদিশ পাওয়া যায়নি। তবে মে মাসে ১১ জন আক্রান্ত হন। সেই থেকে ক্রমশ বাড়ছে প্রত্যেক আক্রান্তের সংখ্যা। যেমন, জুন মাসে ৩০ জন, জুলাই মাসে ৪৭ জন করোনা আক্রান্ত হন। তবে সব থেকে বেশি অগস্ট মাসে। এই মাসে ১৬১ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এই মাসে এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত ৬৭ জন। এই মুহূর্তে অ্যাক্টিভ কেস ৩৩ জন। যাঁদের মধ্যে বেশিরভাগ উত্তর আমলানি এলাকার। করোনা আক্রান্ত হয়ে এই ব্লকে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। পরীক্ষার বিষয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সাহিন হাসান বলেন, ‘‘আগেও দিনে ১৫০ করে পরীক্ষা হত। এখনও দিনে একই পরিমাণ পরীক্ষা হচ্ছে। তবে এই মাসে এখনও পর্যন্ত যতজন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তাতে মনে হচ্ছে এ বার হয় তো গত মাসের থেকে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কমবে।” তিনি আরও জানান, ব্লকের বেশিরভাগ করোনা আক্রান্ত রোগী বাড়িতে থেকে সুস্থ হয়েছেন।