মাস্ক নেই। শারীরিক দূরত্বের বালাই নেই। চলছে আড্ডা। ছবি: সুজিত দুয়ারি
হাবড়া শহরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় লাগাম টানা যাচ্ছে না। রোজই লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, সোমবার পর্যন্ত শহরে আক্রান্তের সংখ্যা ১১৯৪ জন। সুস্থ হয়েছেন ১০৭৭ জন। মারা গিয়েছেন ১৯ জন। বাকিরা চিকিৎসাধীন। শেষ ৮ দিনে শহরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৭৩ জন।এই পরিস্থিতিতে শহরবাসীর একাংশ আরও বেশি করে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। কোনও রকম স্বাস্থ্য বিধির তোয়াক্কা না করে বাড়ির বাইরে ঘোরাঘুরি করছেন। সকাল সন্ধ্যায় চায়ের দোকানে বসে মানুষ গল্পে মাতছেন। মাস্ক ছাড়া আড্ডা দিচ্ছেন প্রবীণেরা। মাঠে, সড়কের পাশে দাঁড়িয়েও মানুষ শারীরিক দূরত্ব বিধি বজায় না রেখে আড্ডা মারছেন।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উপসর্গ নিয়েও মানুষ লালারস পরীক্ষা করাচ্ছেন না। আবার লালারস দিয়ে এসে রিপোর্ট আসার আগেই মানুষ বেরিয়ে পড়ছেন। হাবড়া শহরে করোনা সংক্রমণে লাগাম দিতে বাজারহাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে চাইছে স্থানীয় প্রশাসন। দিন কয়েক আগে হাবড়া পুরসভায় থানার আইসি গৌতম মিত্র এলাকার ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন। উপস্থিত ছিলেন পুরপ্রশাসক নীলিমেশ দাসও।
আইসি বলেন, “ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে কোনও ক্রেতা মাস্ক না পরে আসলে প্রথম দিন বিক্রেতা তাঁকে মাস্ক দেবেন। দ্বিতীয় দিন থেকে কেউ মাস্ক না পরে আসলে তাঁকে মালপত্র দেওয়া হবে না। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলি বিক্রেতাদের মাস্ক সরবরাহ করবে। ক্রেতাদের পাশাপাশি বিক্রেতাদেরও মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।” বৈঠকে ঠিক হয়, পুলিশ, পুরসভা ও ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা যৌথ ভাবে বাজার এলাকায় নজরদারি চালাবেন।
এখন পুজোর মরসুমে বাজারে ভিড় বেড়েছে। এখন মাস্ক পরা আরও জরুরি। এ বিষয়ে ক্রেতা বিক্রেতাদের সচেতন করতে মাইক প্রচারও করা হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিলেও একটা বড় অংশের মানুষের মধ্যে সচেতনতা দেখা যাচ্ছে না। মাস্ক ছাড়াই অনেকে বাজারহাটে, দোকানে যাচ্ছেন। এখনও বাজারহাটের দোকানে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে শারীরিক দূরত্ব বিধি বজায় রাখা হচ্ছে না। বিক্রেতাদের গলায় মাস্ক ঝুলছে। ক্রেতারা অনেকেই মাস্ক পরেননি। বাজারগুলির পরিস্থিতি ভয়াবহ। হাবড়া পাটপট্টি কালীবাড়ি বাজারে দেখা গেল এক আনাজ বিক্রেতার গলায় ঝুলছে মাস্ক। আনাজ বিক্রেতা বলেন, “মাস্ক মুখ থেকে শুধু খুলে পড়ে যাচ্ছিল। তাই খুলে রেখেছি। বাড়ি যাওয়ার সময় পরে নেব।” মাস্কহীন এক ক্রেতার কথায়, “একটু আগে টিফিন করলাম। তাই মাস্কটা পকেটে রেখেছি।’’