বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার দেওয়া হচ্ছে বসিরহাটে। ছবি: নির্মল বসু
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রে বুধবার থেকে শুরু হল ২ কেজি করে চাল এবং ২ কেজি করে আলু দেওয়া। তবে উত্তর ২৪ পরগনার অন্যত্র এখনও স্বাভাবিক হয়নি খাবার বিলি।
বসিরহাটের শিশুবিকাশ সেবা প্রকল্পের অধীনে থাকা ৭৫টি অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রের শিশু ও প্রসূতিদের খাবার দেওয়া হয়েছে। কোথাও বাড়ি গিয়ে দিয়ে এসেছেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। আবার কোথাও নিজেরাই কেন্দ্রে এসে খাবার নিয়ে গিয়েছেন। তবে এই অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রের অধীনে থাকা প্রসূতি ও শিশুদের অভিভাবকেরা জানান, শুধু ভাত-আলু খেয়ে কি পুষ্টি হয়? যদি ডাল-ডিম দিত তা হলে ভাল হত।
এ দিন সকালে বসিরহাট শিশুবিকাশ সেবা প্রকল্পের আধিকারিক জ্যোতিরিন্দ্র চক্রবর্তী বাড়ি বাড়ি যান খাবার দিতে। পশ্চিম দন্ডিরহাট পাড়ুইপাড়া শিশু আলয়ে খাবার নেওয়ার জন্য সকাল থেকেই ভিড় হয়েছিল। সেখানে সকলের সামনে কাঁটা মেপে ওজন করে চাল ও আলু দেওয়া হয়েছে। ওই কেন্দ্রে রয়েছে ৮০ জন শিশু, ১০ জন গর্ভবতী এবং ৫ জন প্রসূতি। তাঁদের অধিকাংশই এ দিন কেন্দ্রে এসে খাবার নিয়ে গিয়েছেন।
দন্ডিরহাট আমতলা ১৩ নম্বর শিশু আলয়ে ৩৮ জন শিশু, গর্ভবতী ৪ এবং প্রসূতি ৬ জন রয়েছে। সেখানে আগেই চালু-আলু ভাগ করে রাখা হয়েছিল। অনেকেই এসে নিয়ে গিয়েছেন। যাঁরা আসতে পারেননি তাঁদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। জ্যোতিরিন্দ্র বলেন, ‘‘করোনার জেরে সরকারের নির্দেশ মত আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সব কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। ওই সময়ে যাতে মা এবং শিশুরা অপুষ্টিতে না ভোগেন সে জন্য মাথা পিছু ২ কিলো চাল এবং ২ কিলো আলু দেওয়া হবে।’’ কেউ যদি কেন্দ্র থেকে এসে খাবার নিয়ে যেতে চান যেতে পারেন। না হলে বাড়ি গিয়েও খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী অপর্ণা ঘোষ, ফরিদা খাতুন নাহার বলেন, ‘‘প্রতিদিন সকাল হলেই শিশু এবং মায়েদের সঙ্গে কাটাতে তাঁদের সুবিধা অসুবিধার কথা শুনে সমস্যার সমাধান করতে বেশ ভাল লাগত। করোনার জন্য আগামী কয়েকদিন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। বাড়ি গিয়ে শিশুদের খোঁজ নিয়ে আসব। প্রয়োজনে খাবারও পৌঁছে দেওয়া হবে।’’
গর্ভবতী আন্না বিবি বলেন, ‘‘সরকারি সিদ্ধান্ত হিসাবে চাল-আলু দেওয়া হচ্ছে। এতে কী আর পুষ্টি হয়। ডিম এবং ডাল দিলে ভাল হত।’’ একই বক্তব্য স্বপ্না সাধু, কারিমা বিবি ও আমিনা বিবির।
জেলা প্রকল্প দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাট মহকুমার ৩ হাজারের উপর অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রের সঙ্গে প্রায় ২ লক্ষ শিশু, প্রসূতি এবং গর্ভবতী জড়িত আছেন। তাঁদের সকলকেই সরকারি সাহায্য
দেওয়া হবে।