ছবি এএফপি।
করোনাভাইরাসের তথ্য সংগ্রহ এবং সচেতন করতে বাড়ি বাড়ি যেতে হচ্ছে কিছু সরকারি কর্মীকে। কিন্তু তাঁদের কোনও সুরক্ষার ব্যবস্থা করেনি সরকার বলে অভিযোগ।
প্রশাসন থেকে করোনা মোকাবিলায় বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভিন রাজ্য বা বিদেশ থেকে কেউ গ্রামের বাড়িতে ফিরছেন কিনা এবং কারও জ্বর, সর্দি, কাশি বা শ্বাসকষ্ট হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে বাড়ি বাড়ি যেতে হচ্ছে বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রের কর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী ও আশাকর্মীদের। করোনা আতঙ্কের মধ্যেই সুরক্ষা ছাড়াই তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে হচ্ছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সচেতন করতেও যেতে হচ্ছে। আর এই নিয়েই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে এই সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের।
এ বিষয়ে জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, ‘‘ওই সমস্ত কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে কোনও মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস বা হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার দেওয়া হয়নি। আমরা ওই সমস্ত কর্মীদের সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে মাস্ক তৈরি করার দায়িত্ব দিয়েছি। তা হাতে পেলে এক-দু দিনের মধ্যেই তাঁদের দিয়ে দেব।’’
করোনা মোকাবিলায় তৎপর রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্র থেকে শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। খুব প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ মানুষকে বাইরে বের হতে বারণ করা হয়েছে।
অভিযোগ, সরকার থেকে সুরক্ষার কথা একাধিকবার ঘোষণা করা হচ্ছে। কিন্তু এই সমস্ত কর্মীদের জন্য সরকার কোনও ব্যবস্থা করছে না। তাঁদের জন্য কোনও মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার নেই। এ বার করোনাভাইরাস রুখতে যাঁরা ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তাঁদের সুরক্ষা ব্যবস্থা কোথায়— তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ওই সমস্ত সরকারি কর্মীরা যদি কোনও ভাবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন তা হলে তাঁরা কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। সবটাই তাই ভাগ্যের উপরে ছেড়ে দিয়ে করোনা সচেতনতায় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।
শুধু তাই নয়, সরকারি নির্দেশ মেনে এখন বন্ধ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু তা সত্ত্বেও অঙ্গনওয়াড়িকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে পৌঁছে দিতে হচ্ছে প্রসূতি মা ও শিশুদের জন্য খাবার। এ নিয়েও অঙ্গনওয়াড়িকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী বলেন, ‘‘সামান্য কিছু টাকা সাম্মানিক হিসেবে ভাতা পাই। অথচ এখন সরকারি ভাবে বলা হচ্ছে আমাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল-আলু পৌঁছে দিতে হবে। ওই সমস্ত খাদ্যদ্রব্য পৌঁছে দিতে গিয়ে বহন খরচ এবং আমাদের যাতায়াতের খরচ সরকার দিচ্ছে না। কী ভাবে ওই খরচ বহন করব বুঝতে পারছি না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ মেনে আমরা গ্রামে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করার পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করছি। অথচ আমাদের সুরক্ষার জন্য ন্যুনতম মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারের কোনও রকম ব্যবস্থা করা হয়নি।’’
অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করতে হচ্ছে কোন কোন বাড়িতে কতজন বিদেশ বা ভিন রাজ্য থেকে এসেছেন, কত দিন তিনি বাইরে ছিলেন — একটি ফর্ম পূরণ করে লিপিবদ্ধ করতে হচ্ছে। কিন্তু তাঁদের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আছে কিনা তা জানা নেই কারও। এই কারণেই সরকারি কর্মীরা আতঙ্কে ভুগছেন।