প্রতীকী চিত্র।
হাসপাতালে ভর্তি থাকা এক রোগী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় হাসপাতালে রোগী ভর্তি বন্ধ করে দেওয়া হল।
বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে গাইঘাটার চাঁদপাড়া ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে। তবে জরুরি বিভাগ খুলে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে মুমূর্ষু রোগীরা আপৎকালীন চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, জ্বর নিয়ে এক যুবক কয়েক দিন আগে ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে ছিলেন। শারীরিক উপসর্গ দেখা দেওয়ায় চিকিৎসকেরা তাঁকে ১৭ জুলাই ব্যারাকপুরে আইসোলেশন হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন। সে দিন থেকে তিনি ব্যারাকপুরেই চিকিৎসাধীন।
গাইঘাটার বিএমওএইচ সুজন গায়েন বলেন, ‘‘বুধবার ওই যুবকের লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট আমাদের কাছে এসেছে। তিনি করোনা পজ়িটিভ। তারপরেই চাঁদাপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে রোগী ভর্তি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। শুক্রবার থেকে রোগী ভর্তি শুরু করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, চাঁদাপাড়া হাসপাতালে মোট শয্যা সংখ্যা ৩০টি। বুধবার পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ১২ জন রোগী। তাঁদের মধ্যে ৬ জন রোগীর শারীরিক অবস্থা ভাল থাকায় তাঁদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ৪ জনকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ২ জন অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে অবশ্য চাঁদপাড়া হাসপাতালেই ভর্তি রাখা হয়েছে।
ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গাইঘাটা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এক নার্স করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সে কারণে বুধ ও বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছে। শুক্রবার থেকে ফের স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি খুলে দেওয়া হচ্ছে। গাইঘাটা ব্লকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দাঁড়াল ৬৪ জন।
বৃহস্পতিবার বনগাঁ ব্লকে নতুন করে ৫ জন করোনায় আক্রান্ত হলেন। বনগাঁর বিএমওএইচ মৃগাঙ্ক সাহা রায় বলেন, ‘‘৫ জনের রিপোর্ট পেয়েছি। সকলেই করোনা পজ়িটিভ। একজনকে কলকাতার সরকারি হাসপাতালে এবং বাকি ৪ জনকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করা হয়েছে।’’
স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন ২ জন পুলিশ কর্মী, একজন শিক্ষক, এক ইঞ্জিনিয়ার এবং একজন গাড়ির চালক। তাঁদের বাড়ি পাল্লা ধর্মপুকুরিয়া এবং ঘাটবাওর পঞ্চায়েত এলাকায়। বনগাঁ ব্লকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৬৪ জন।
এ দিকে, বনগাঁ পুরসভার তরফে শহরের একটি পথের সাথীকে সেফ হাউজ় হিসাবে তৈরি করা এবং বনগাঁয় একটি কোভিড হাসপাতালে তৈরি করার আবেদন জানিয়ে প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতরের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পুরপ্রশাসক শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘মহকুমা জুড়ে করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। তাঁদের চিকিৎসার কথা ভেবে আমরা সেফ হাউজ় এবং করোনা হাসপাতালের দাবি জানিয়েছি।’’ বনগাঁর বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকেও বনগাঁয় কোভিড হাসপাতাল তৈরির দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সহ প্রশাসন স্বাস্থ্য দফতর এবং জনপ্রতিনিধিদের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে।