লাগানো হয়েছে তৃণমূলের পতাকা। ছবি: নির্মল বসু
রাজ্য রাজনীতিতে তাঁকে এক সময়ে বলা হত, ‘বসিরহাটের গাঁধী’। নবতিপর মানুষটি মৃত্যুর আগের মুহূর্ত পর্যন্ত ছিলেন কংগ্রেসের একনিষ্ঠ কর্মী। রাজ্য রাজনীতির দল বদলের পরিচিত ইতিহাসে আব্দুল গফ্ফর চিরকালই ব্যতিক্রমী নাম। বাদুড়িয়ায় তাঁর হাতে তৈরি পার্টি অফিসে এখন অবশ্য পতপত করে উড়ছে তৃণমূলের পতাকা। দিন কয়েক আগেই গফ্ফর সাহেবের ছেলে আব্দুর রহিম দিলু কংগ্রেস ছেড়ে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। তার কয়েক ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই সন্ধের দিকে বাদুড়িয়া শহরের লরি স্ট্যান্ডে কংগ্রেসের অফিসের ভোল বদলেছে। অভিযোগ, শনিবার দিলু তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরেই সেখানে কংগ্রেসের পতাকা সরিয়ে ঘাসফুল ছাপ পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বাদুড়িয়ায় এত বছরের পুরনো কংগ্রেস পার্টি অফিসের এই হাল পুরনো কংগ্রেসিদের তো বটেই, এলাকার বহু মানুষের কাছেও দৃষ্টিকটূ ঠেকছে। পার্টি অফিস দখলের প্রতিবাদে ১৮ নভেম্বর এলাকায় মিছিল করার করার কথা প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরীর, জানাচ্ছে দলের একটি সূত্র।
দিলু অবশ্য বলেন, ‘‘লরি স্ট্যান্ডের কাছে থাকা কংগ্রেসের অফিস আমাদের হাতে গড়া। ফলে কংগ্রেসের দলীয় দফতর দখল করা নয়, কংগ্রেসিরা তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় দফতরের পতাকা পরিবর্তন করা হয়েছে।’’ গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় কংগ্রেস শিবির। তাঁদের একটা বড় অংশই অবশ্য দিলুর হাত ধরে এখন তৃণমূল শিবিরে। তবে যাঁরা ‘হাত’ আঁকড়ে পড়ে আছেন, তাঁরা প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি প্রদীপকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গফ্ফর সাহেবের হাতে গড়া পাটি অফিস থেকে রাতারাতি কংগ্রেসের পতাকা খুলে সেখানে তৃণমূলের পতাকা লাগিয়ে দখল করলেন গফ্ফর সাহেবের ছেলেরই অনুগামীরা। পাল্টা দখল করতে গেলে সংঘর্ষ বাধতে পারে বলে সে পথে যাওয়া হয়নি। অধীরবাবু আসছেন। তাঁকে সব জানানো হয়েছে। এই ঘটনায় বাদুড়িয়ার মানুষ ক্ষুব্ধ।’’ প্রদীপের দাবি, কারও পার্টি অফিস দখল নিলে পার্টি উঠে যায় না। বাদুড়িয়ায় কংগ্রেসিরা আছেন, থাকবেন। এ বিষয়ে টাউন তৃণমূলের আহ্বায়ক সুভাষ সাহা বলেন, ‘‘কারও দলীয় কার্যালয় দখল করা তৃণমূলের কাজ নয়। আমরা কারও পার্টি অফিস দখলও করিনি।’’