মৃত্যুঞ্জয় বৈরাগী
ঠান্ডা মাথায় খুন করায় তার জুড়ি মেলা ভার। খুন করে জেলে যাওয়া, আর জেল থেকে বেরিয়েই আবার খুন-সহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়া— এটাই ছিল ভাড়াটে খুনি মৃত্যুঞ্জয় বৈরাগী ওরফে মৃত্যুনের অভ্যাস। সম্প্রতি মধ্যমগ্রামে গৌতম দে সরকার ওরফে ঢাকাই গৌতমকে লক্ষ করে নাইন এমএম পিস্তল থেকে যাকে গুলি করতে দেখেছিল জনতা, সে ছিল মৃত্যুনই। শুক্রবার দুপুরে তাকে গ্রেফতারের পরে এমনই জানিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।
পুলিশ জানায়, এ দিন মধ্যমগ্রাম থানা এলাকার একটি ক্লাবের কাছ থেকে মৃত্যুনকে ধরা হয়। তার কাছে ৩০ কেজি ৩০০ গ্রাম গাঁজাও উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের দাবি, জেরায় মৃত্যুন স্বীকার করেছে যে, গত ২ ফ্রেব্রুয়ারি সকালে মধ্যমগ্রামের বঙ্কিমপল্লির এক সেলুনে গৌতমের শরীরে পিস্তল ঠেকিয়ে সে-ই চার রাউন্ড গুলি চালিয়েছিল। পরে এলাকার মানুষকে ভয় দেখাতে বোমা ছুড়তে ছুড়তে মোটরবাইকে করে পালায় তারা।
ওই খুনের পরে টুবাই মোদক-সহ ১২ জনের নামে অভিযোগ জানায় গৌতমের পরিবার। মৃত্যুনকে নিয়ে এই ঘটনায় মোট ১০ জনকে ধরল পুলিশ। তবে ওই খুনে মূল অভিযুক্ত টুবাই এখনও ধরা পড়েনি। এ দিন অভিজিৎবাবু জানান, টুবাইয়ের সঙ্গেই ছিল মৃত্যুন। টুবাইয়ের খোঁজেও তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
গাইঘাটা থানার ঠাকুরনগরের বাসিন্দা মৃত্যুনের অপরাধ জগতে হাতেখড়ি ছেলেবেলায়। বেশ কয়েকটি খুনের ঘটনায় উঠে আসে এই ভাড়াটে খুনির নাম। একাধিক বার ধরাও পড়ে সে। ছাড়া পেয়ে ফের অপরাধে নামে। পুলিশ জানিয়েছে, গৌতমকে খুনের পরে প্রথমে এলাকার বাইরে থাকলেও সম্প্রতি সোদপুরের কাছে ঘোলায় থাকছিল মৃত্যুন। খুনের পরে বিভিন্ন পানশালা ও যৌনপল্লিতেও রাত কাটিয়েছে সে। সেই সব এলাকায় পুলিশ হানা দেওয়ার আগেই চম্পট দেয় মৃত্যুন। তবে এ দিন সে আর পুলিশের চোখে ধুলো দিতে পারেনি।